মাদক শুধু একজন ব্যক্তিকে নয়, ধ্বংস করে দেয় একটি পরিবার, সমাজ ও প্রজন্মকে। ইয়াবা নামের এই প্রাণঘাতী ট্যাবলেট শহর থেকে গ্রাম—সবখানেই ছড়িয়ে পড়ছে নীরবে। একদিকে তরুণ প্রজন্ম আসক্ত হচ্ছে, অন্যদিকে কিছু অসাধু ব্যক্তি বিপুল অর্থ উপার্জনের হাতিয়ার হিসেবে মাদক ব্যবসাকে বেছে নিয়েছে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় মাঝে মধ্যেই ভেসে আসে আশার আলো। তেমনি একটি ঘটনা ঘটেছে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলায়।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে সাধারণ মানুষের মতোই চলছিল কড্ডা-জামতৈল আঞ্চলিক সড়ক দিয়ে যাতায়াত। হঠাৎই র্যাব-১২ সদস্যদের বিশেষ টিম উপস্থিত হয় ভারাঙ্গা গ্রামের পাকা রাস্তায়। চারপাশে কৌতূহলী মানুষের ভিড়, নিস্তব্ধ হয়ে যায় গ্রামীণ সেই পথ। অল্প সময়ের মধ্যেই র্যাব সদস্যরা আটক করেন আব্দুর রহিম ওরফে সুইট (৩৭) নামের এক ব্যক্তিকে। তার ভ্যানগাড়ি তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার করা হয় ৪ হাজার ৯৭০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট।
র্যাব-১২ সিরাজগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীপঙ্কর ঘোষ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, আটক রহিম ওরফে সুইট দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদক কেনাবেচায় জড়িত ছিলেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি নিজেই তা স্বীকার করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, গ্রামের অনেক তরুণ সহজেই মাদকের ফাঁদে পা দিচ্ছে। পরিবারগুলো ভেঙে যাচ্ছে, পড়ালেখা ছেড়ে তরুণরা জড়িয়ে পড়ছে অপরাধে। সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, একজন মাদক ব্যবসায়ীর হাতে হাজারো পরিবার বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।
এই অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছেন এলাকাবাসী। তাদের ভাষ্য—র্যাবের মতো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্যোগেই সমাজকে মাদকের ভয়াল ছোবল থেকে বাঁচানো সম্ভব। আটক রহিমের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে কামারখন্দ থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মাদকের ভয়াবহতা ঠেকাতে শুধু আইন প্রয়োগই যথেষ্ট নয়, দরকার সচেতন পরিবার, সচেতন সমাজ ও বিকল্প বিনোদনের সুযোগ। না হলে প্রতিদিনই হয়তো নতুন নতুন রহিম সৃষ্টি হবে, যারা টাকার মোহে তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করবে।
কালের সমাজ//র.ন


আপনার মতামত লিখুন :