বন্যা ও ভূমিধসে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা ও আচেহ প্রদেশে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯১৬ জনে দাঁড়িয়েছে। নিখোঁজ রয়েছে আরও ২৭৪ জন। চলতি মাসের শুরুতে আঘাত হানা এ দুর্যোগে থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়াতেও প্রায় ২শ জনের মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সুমাত্রার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আচেহ তামিয়াং এলাকায় ত্রাণ পেতে স্থানীয় বাসিন্দাদের এক ঘণ্টারও বেশি পথ হেঁটে আসতে হয়েছে। পথে পড়ে থাকা পিচ্ছিল গাছের গুঁড়ি, উল্টে যাওয়া গাড়ি পেরিয়ে তারা স্বেচ্ছাসেবীদের স্থাপিত একটি ত্রাণকেন্দ্রে পৌঁছান। সেখানে তাদের পরিষ্কার পোশাক ও পানির ট্যাংকার থেকে সরবরাহ করা নিরাপদ পানি বিতরণ করা হয়।
এদিকে সুমাত্রার স্থানীয় প্রশাসন কেন্দ্রীয় সরকারকে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণার আহ্বান জানিয়েছে, যাতে উদ্ধার ও ত্রাণে অতিরিক্ত তহবিল ব্যবহার করা যায়।
তবে গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো বলেছেন, পরিস্থিতি উন্নতির দিকে এবং বিদ্যমান ব্যবস্থাই যথেষ্ট।
প্রাদেশিক ও কেন্দ্রীয় সরকারের বরাত দিয়ে রোববার (৭ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।
ইন্দোনেশিয়ার পরিবেশবাদী সংস্থাগুলোর অভিযোগ, বন্যা-ভূমিধসে ব্যাপকমাত্রার এই প্রাণহানির প্রধান কারণ বনজঙ্গল উজাড় হওয়া এবং অবৈধ খনি খনন।
পরিবেশজনিত ক্ষয়ক্ষতির জন্য চীনের জলবিদ্যুৎ উৎপাদনকারী নর্থ সুমাত্রা হাইড্রো এনার্জি এবং স্বর্ণ খনির অনুসন্ধান ও স্বর্ণ উত্তোলনকারী এগিনকোর্ট রিসোর্সেসসহ কয়েকটি কোম্পানিকে দায়ী করছে ইন্দোনেশীয় পরিবেশবাদী সংস্থাগুলো। প্রায় সবগুলো কোম্পানিই চীনের অর্থায়নপুষ্ট।
পরিবেশাবাদী সংস্থাগুলোর অভিযোগের প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়ে নর্থ সুমাত্রা হাইড্রো এনার্জি ও এগিনকোর্ট রিসোর্সেসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স, কিন্তু কোম্পানির কর্মকর্তারা কোনো প্রতিক্রিয়া জানাতে রাজি হননি।
ঘূর্ণিঝড় সেনিয়ার এবং তার আগে-পরে বেশ কয়েকটি মৌসুমি ঝড় ও ভারী বর্ষণের জেরে গত নভেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে বন্যা শুরু হয়েছে ইন্দোনেশিয়ায়। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে সুমাত্রা ও আচেহ প্রদেশ। বন্যার পাশাপাশি দুই প্রদেশের বিভিন্ন এলাকায় ভূমিধসের ঘটনাও ঘটেছে। মূলত এর জেরেই বেড়েছে মৃতের সংখ্যা।
কালের সমাজ/এসআর


আপনার মতামত লিখুন :