ভারতের গোয়া রাজ্যে একটি নাইট ক্লাবে পার্টি চলাকালে অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ২৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। পুলিশের ধারণা, সিলিন্ডার বিস্ফোরণেই এমন অগ্নিকাণ্ড। তবে এখনো নিশ্চিত করে কিছু বলা হয়নি।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) গভীর রাতে ক্লাবের একতলার রান্নাঘর থেকে আগুন ছড়িয়ে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের সংখ্যা ২৫। তাদের মধ্যে ১৪ জন হোটেলকর্মী, চার পর্যটক রয়েছেন।
জানা গেছে, রাত তখন শনিবার সাড়ে ১২টা। সপ্তাহের শেষ দিনগুলিতে এমনিতেই নৈশক্লাব, পাব এবং রেস্তরাঁগুলিতে ভিড় থাকে। উত্তর গোয়ার আরপোরা গ্রামের ওই নৈশক্লাবেও ভিড় ছিল যথেষ্ট। ক্লাবের দোতলায় নাচগানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে ক্লাবের সদস্য, কর্মী এবং পর্যটক মিলিয়ে প্রায় ১০০ জনের মত ছিলেন। সকলেই তখন নাচগানে মশগুল।
নাইট ক্লাবে হায়দরাবাদ থেকে গিয়েছিলেন ফতিমা শেখ। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে তিনি বলেন, ‘দোতলায় নাচগান চলছিল। আমিও সেখানে ছিলাম। হঠাৎ শুনলাম আগুন লেগেছে। যেখানে নাচগান হচ্ছিল, তার ঠিক পাশেই আগুন লেগেছিল। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন সকলে। তার পর যা হয়। সকলে একসঙ্গে সিঁড়ি দিয়ে নীচে নামার চেষ্টা করেন।’
ফতিমা আরও জানিয়েছেন, বেশিরা ভাগই বেরিয়ে আসতে পেরেছিলেন। কিন্তু আগুন এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল যে, কয়েক জন বেসমেন্টে আশ্রয় নেন। আগুন ক্রমে বাড়ছিল। তার সঙ্গে কুণ্ডলী পাকানো ধোঁয়া। শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। যতটা দূর পেরেছেন সরে গিয়েছিলেন পর্যটকেরা। কিন্তু যারা ভিতরে আটকে পড়েছিলেন, তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
ফতিমা বলেন, বেসমেন্টে রান্নাঘর ছিল। সেখানে কাজ করছিলেন কয়েক জন কর্মী। আশ্রয় নিতে কয়েক জন পর্যটক সেখানে ঢুকে পড়েন।
তিনি আরও জানিয়েছেন, ক্লাবটির সৌন্দর্যায়নের জন্য তালপাতা দিয়ে সাজানো হয়েছিল। ফলে সেগুলিতে আগুন ধরে যাওয়ায়, ক্লাবের অন্যত্র সেই আগুন দ্রুতগতিতে ছড়াতে শুরু করে।
আগুনে নিহতদের পরিবারের জন্য দুই লাখ রুপি করে এবং আহতদের জন্য ৫০ হাজার রুপি করে অনুদানের ঘোষণা দিয়েছে দেশটির সরকার।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, নিহতদের অধিকাংশই ওই ক্লাবের কর্মী এবং ঘটনার সময় তারা রান্নাঘরে আটকে পড়েছিলেন। তিন থেকে চার জন পর্যটকও রয়েছেন বলে কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে।
গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্ত এই ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুঃখপ্রকাশ করে বলেন, গোয়ার জন্য খুব হৃদয়বিদারক একটি দিন। আমি গভীরভাবে শোকাহত। এই কঠিন সময়ে মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।
এছাড়া মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাবন্ত ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। নৈশক্লাবের মালিক এবং ম্যানেজারের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে।
শোকপ্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, গোয়ার অগ্নিকাণ্ড অত্যন্ত দুঃখজনক। যারা প্রিয়জনকে হারালেন, তাদের প্রতি আমার সমবেদনা। আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। গোয়ার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে আমার ফোনে কথা হয়েছে। রাজ্য সরকার সম্ভাব্য সব ধরনের সাহায্য করছে।
কালের সমাজ/এসআর


আপনার মতামত লিখুন :