বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান ঘোষণা দিয়েছেন, “ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ের পর এবার দুর্নীতির বিরুদ্ধে আরেকটি যুদ্ধ শুরু হবে।”
শনিবার (১৯ জুলাই) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত জাতীয় সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “জামায়াত যদি ভবিষ্যতে সরকার গঠন করে, তাহলে দলের কোনো সংসদ সদস্য বা মন্ত্রী সরকারি উপহার নেবেন না। তারা ট্যাক্সবিহীন গাড়ি ব্যবহার করবেন না, সরকারি টাকায় বিলাসিতা করবেন না। বরাদ্দ পেলে তার বিস্তারিত হিসাব জনসম্মুখে প্রকাশ করতে বাধ্য থাকবেন। চাঁদাবাজি ও দুর্নীতিকে কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না।”
তিনি বলেন, “আমরা জনগণের জন্য সেবক হয়ে কাজ করতে চাই, মালিক হয়ে নয়। একটি সৎ ও জবাবদিহিতামূলক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠাই আমাদের লক্ষ্য।”
বক্তব্যের একপর্যায়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মঞ্চে পড়ে যান জামায়াত আমির। কিছু সময়ের মধ্যেই উঠে দাঁড়িয়ে বক্তব্য অব্যাহত রাখেন তিনি। তবে দ্বিতীয়বার পুনরায় অসুস্থ হয়ে পড়লে জামায়াতের স্বেচ্ছাসেবক ও চিকিৎসকরা তার সেবা করতে এগিয়ে আসেন। কিন্তু তিনি তাদের সাহায্য না নিয়ে মঞ্চে বসেই বক্তব্য শেষ করেন।
মেঝেতে বসে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “যতদিন আল্লাহ হায়াত দিয়েছেন, আমি জনগণের পক্ষে লড়াই করে যাব। জামায়াতের যেকোনো নেতা নির্বাচিত হলে তিনি কোনো ধরনের বিলাসিতা করবেন না। জনগণের প্রতিটি পয়সার হিসাব জনগণকেই দিতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আজ আমি জামায়াতের আমির হয়ে নয়, বরং ১৬ কোটি মানুষের একজন হয়ে কথা বলতে এসেছি। আমি শিশুদের বন্ধু, যুবকদের ভাই, বয়স্কদের সহযোদ্ধা, আর নারীদের রক্ষক। আজ আমি এসেছি পরিচ্ছন্নতাকর্মী থেকে শুরু করে শ্রমজীবী মানুষের হয়ে কথা বলতে।”
সমাবেশে উপস্থিতদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “পুরোনো ধ্যান-ধারণা আর চলবে না। দেশে নতুন শাসনব্যবস্থা আসবে, ন্যায়ভিত্তিক সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। যারা প্রাণ দিয়েছেন, তাদের রক্ত বৃথা যাবে না।”
জুলাই আন্দোলনে শহীদ হতে না পারাকে ‘ব্যক্তিগত দুর্ভাগ্য’ বলে আখ্যা দিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “আমি দোয়া চাই, যেন আগামীর ইনসাফভিত্তিক লড়াইয়ে আল্লাহ আমাকে শহীদ হিসেবে কবুল করেন।”
বক্তব্যের শেষ দিকে তিনি জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “অন্য কোনো রাজনৈতিক দলকে অবজ্ঞা করে নয়, সকল শ্রেণির মানুষের অধিকার নিশ্চিত করেই আমরা এগিয়ে যাব।”
সমাবেশজুড়ে ডা. শফিকুর রহমানের বক্তব্যে উঠে আসে সুশাসন, জবাবদিহি, নৈতিকতা ও দুর্নীতিমুক্ত ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি।
কালের সমাজ//এসং.র.ন
আপনার মতামত লিখুন :