পবিত্র হজের খুতবায় মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য ও সংহতি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন মসজিদুল হারামের ইমাম শায়খ ড. সালেহ বিন হুমাইদ। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) মক্কার মসজিদে নামিরায় দেওয়া এই ঐতিহাসিক খুতবায় তিনি বলেন, শয়তান মুসলমানদের প্রকাশ্য শত্রু। এ শত্রুর মোকাবিলায় উম্মাহর মধ্যে পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ব, সংহতি ও একতা অপরিহার্য।
তিনি বলেন, “আল্লাহ তায়ালা ইসলামকে মানবজাতির জন্য পূর্ণাঙ্গ দ্বীন হিসেবে মনোনীত করেছেন। মুসলমানদের উচিত তাকওয়া অবলম্বন করা, কারণ তাকওয়াই একজন ঈমানদারের প্রকৃত পরিচয়।” খুতবায় তিনি আরও বলেন, “শত্রুকে ক্ষমা করতে পারলে আল্লাহ তোমাকে তাঁর বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করবেন।”
শায়খ সালেহ সৎকর্মের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “নেক আমল পাপসমূহ মুছে দেয়। আল্লাহর ইবাদত এমনভাবে করো যেন তুমি তাঁকে দেখছো।” তিনি জানান, ইসলামে ইমান, ইসলাম ও ইহসান—এই তিনটি স্তর রয়েছে। এর মধ্যে ‘ইহসান’ হলো সর্বোচ্চ স্তর, যা মানুষকে অন্তর থেকে আল্লাহভীরু করে তোলে।
খুতবায় তিনি পিতা-মাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার, প্রতিশ্রুতি পালন এবং নম্রতাকে ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হিসেবে উল্লেখ করেন। পাশাপাশি লজ্জাশীলতাকেও ঈমানের অংশ হিসেবে বর্ণনা করেন। হাজিদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, হজের সময় বেশি বেশি দোয়া করা ও আল্লাহর জিকিরে রত থাকা উচিত। দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ কামনা করা ইসলামী আদর্শেরই অংশ।
খুতবা চলাকালে হাজার হাজার হাজি জড়ো হন আরাফার ময়দানে, যার পবিত্রতা মুসলমানদের জন্য অশেষ গুরুত্ববাহী। এই ময়দানেই মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বিদায় হজের ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন। সকাল থেকে আরাফাতে জড়ো হতে থাকেন হাজিরা। দিনভর তারা সেখানে অবস্থান করে দোয়া ও ইবাদতে সময় কাটান।
সৌদি সরকার হাজিদের সুরক্ষা নিশ্চিতে আরাফার তীব্র গরমে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বাইরে না থাকার পরামর্শ দিয়েছে। ফজরের আগেই অনেক হাজি জাবালে রহমত ও আশপাশে অবস্থান নেন। সূর্যাস্তের পর তারা মুজদালিফার উদ্দেশে রওনা হন, যেখানে রাতে খোলা আকাশের নিচে কাটিয়ে শয়তানকে নিক্ষেপের জন্য পাথর সংগ্রহ করেন।
পরবর্তী দিনগুলোতে ধর্মীয় বিধি অনুসরণ করে তারা রমি, কোরবানি, তাওয়াফে জিয়ারত ও সাঈ সম্পন্ন করেন। ১৩ জিলহজ পর্যন্ত হজের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ধাপে ধাপে মিনার শিবির ছেড়ে নিজ গন্তব্যে ফিরে যাবেন হাজিরা।
কালের সমাজ//এসং//র.ন
আপনার মতামত লিখুন :