শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার ১ নং কাংশা ইউনিয়নে কাবিখা ও কাবিটা প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়িত কাজ নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসীর দাবি, ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি ও বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান ৩ টি প্রকল্পের সভাপতি যাতে ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকার বরাদ্দ থাকলেও, বাস্তবে কাজ হয়েছে মাত্র ৩ থেকে ৪ লাখ টাকারও কম।
প্রকল্প ৩ টি ছিল: “নাচন মহুরী আল আমিনের বাড়ির নিকট পাকা রাস্তা হইতে রেজাউলের বাড়ির পশ্চিম পার্শ্ব পর্যন্ত রাস্তায় মাটি ভরাট, যার বরাদ্দের পরিমাণ ৪,০০,০০০/- টাকা, ৫ নং ওয়ার্ড কারাগাও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পশ্চিমে পাকা রাস্তা হইতে ছামিউলের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তায় মাটি ভরাট, যার বরাদ্দের পরিমাণ ৪,৫০,০০০/- টাকা, ৩ নং ওয়ার্ড নাচন মহুরী কালামের বাড়ি হইতে ম্যানেজারের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তায় মাটি ভরাট ও সংস্কার যার বরাদ্দের পরিমাণ ৪,০০,০০০/- টাকা”।
অর্থ বর্ষ: ২০২৪-২০২৫
৩ টি প্রকল্পে বরাদ্দের পরিমাণ: ৪,০০,০০০/- টাকা, ৪,৫০,০০০/- টাকা, ৪,০০,০০০/- টাকা, (৩ টি প্রকল্প মিলিয়ে মোট বাজেট ১২,৫০,০০০ টাকা)।
প্রকল্প সভাপতি: জনাব মো. আতাউর রহমান, ইউপি চেয়ারম্যান।
এলাকাবাসীরা অভিযোগ করেন, প্রকল্পের কোনো ধরনের মান বজায় না রেখে কাগজে-কলমে কাজ সম্পন্ন দেখানো হয়েছে। প্রতিটি রাস্তায় ১ মাহিন্দ্র মাটি কমপক্ষে ৪ জায়গায় ফেলে ২ জন কাজের লোক দিয়ে শুধু রাস্তাটি ঢেকে দিয়েছে। রাস্তায় সর্বোচ্চ ৫ ইঞ্চি মাটি দিয়ে ভরাট করেছে। আবার কিছু কিছু জায়গায় একেবারেই মাটি ফেলেনি। রাস্তায় মাটি কম দেওয়ার কারণে বৃষ্টি হওয়ার সাথে সাথেই রাস্তা পিচ্ছিল হয়েছে যার কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “যেখানে ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা উন্নয়নের নামে আসে, সেখানে মাত্র ৩ থেকে ৪ লাখ টাকার কাজ করে বাকি টাকা চেয়ারম্যান আত্মসাৎ করেছেন। এটা খোলামেলা লুটপাট।”
এই বিষয়ে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মোবাইল ফোনে জানান, সে কাবিটা বা কাবিখা কাজে কোনো প্রকার ফাঁকি দেননি। বরং এলাকাবাসী এই কাজে খুব খুসি। তার বিপক্ষ দলের কিছু লোক বাজেভাবে ফাঁসানোর জন্য এসব অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এলাকাবাসীরা বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এবং সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের বিচারের দাবি জানিয়েছেন।
এই বিষয়ে প্রকল্প অফিসার বলেন, কাংশা ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান ৩ টি প্রকল্পেই কাজের ব্যপক অনিয়ম করেছে। আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফুল আলম রাসেল মহোদয়কে সঙ্গে নিয়ে রাস্তাগুলো পরিদর্শন করেছি তাতে কাজের ব্যাপক অনিয়ম দেখেছি। তাই চেয়ারম্যানকে পুনরায় কাজ করে বিল তুলতে হবে এমনকি তাকে রাস্তায় আবার মাটি দেওয়ার জন্য জানিয়ে দিয়েছি। তা না হলে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, আমি যেহেতু এই প্রকল্পের সভাপতি তাই এখানে কাজের অনিয়ম হওয়ার কোন সুযোগ নেই। আমি নিজে কাংশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতাউর রহমানের কাজগুলো পরিদর্শন করেছি তাতে দেখেছি কাজের অনিয়ম হয়েছে তাই এই বিষয়ে আমি উপজেলা প্রকল্প অফিসারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেছি।
কালের সমাজ/শে.প্র //এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :