ঢাকা মঙ্গলবার, ০৩ জুন, ২০২৫, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

রংপুরে দুম্বার খামার সম্প্রসারণে গুরুত্ব দিচ্ছেন উদ্যোক্তা জাহিদ

কালের সমাজ | রংপুর জেলা প্রতিনিধি মে ২৫, ২০২৫, ০৩:৪০ পিএম রংপুরে দুম্বার খামার সম্প্রসারণে গুরুত্ব দিচ্ছেন উদ্যোক্তা জাহিদ

রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার দড়ি জামালপুর গ্রামের নির্জন এক কোণে গড়ে উঠেছে ‘তপ্ত মরুর’ এক ভিন্নধর্মী খামার। এখানে লালন-পালন করা হচ্ছে মরুভূমির প্রাণী দুম্বা। তরুণ উদ্যোক্তা জাহিরুল ইসলাম জাহিদ সৌখিনতা থেকেই শুরু করেছিলেন এই যাত্রা, আর এখন তার স্বপ্ন—দেশব্যাপী দুম্বা ছড়িয়ে দেওয়া।


একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় চাকরির পাশাপাশি নিজের উদ্যোগে খামার গড়েন জাহিদ। ভারতের রাজস্থান থেকে ১ জোড়া দুম্বা এনে ছোট ভাই জিন্নাহ মণ্ডলকে সঙ্গে নিয়ে শুরু করেন খামার পরিচালনা। শুরুতে বিক্রির চিন্তা না করে ধীরে ধীরে সম্প্রসারণের দিকেই জোর দেন তিনি।


বর্তমানে তার খামারে থাকা একেকটি দুম্বার ওজন ৭৫ থেকে ১২০ কেজি পর্যন্ত। এসব দুম্বার প্রতিটির বাজারমূল্য আড়াই লাখ থেকে চার লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। ছয় মাস বয়সী একটি বাচ্চা দুম্বার দাম পড়ে প্রায় ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা।


খামারে প্রতিদিন রুটিন মাফিক দুম্বাদের খাওয়ানো হয় ঘাস, খড়, পাতা, ভূষি ও সরিষা খৈল। শান্ত স্বভাবের প্রাণী হওয়ায় দুম্বা পালন বেশ সহজ বলে জানান জাহিদ ও তার ভাই জিন্নাহ। তারা বলেন, দুম্বার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি হওয়ায় চিকিৎসা খরচও খুব কম।


রংপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আবু ছাঈদ জানান, দুম্বা পালন বাড়ছে এবং এর জন্য আলাদা প্রশিক্ষণের প্রয়োজন নেই। ভেড়া ও গাড়লের মতো একই পদ্ধতিতে দুম্বা পালন করা যায়।


জাহিদের এই উদ্যোগ ইতোমধ্যে স্থানীয়ভাবে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসছেন তার খামার দেখতে। স্থানীয় যুবক ফজলুল করিম চয়ন বলেন, “এর আগে আমাদের এলাকায় কেউ দুম্বা পালন করেনি। জাহিদ ভাই পথ দেখিয়েছেন। এটা লাভজনক ব্যবসা, চাহিদাও বাড়ছে।”


রংপুর শহর থেকে খামার দেখতে আসা মোহাম্মদ শামীম জানান, তিনি নিজেও দুম্বা পালনে আগ্রহী এবং শিগগিরই একটি খামার শুরু করার পরিকল্পনা করছেন।


জাহিদ বলেন, “প্রথমে হরিণ পালনের কথা ভাবলেও পরে গবেষণা করে দুম্বার খামার গড়ি। ভারত ও পাকিস্তানি ‘টার্কিজ’ প্রজাতির দুম্বা দিয়ে খামার শুরু করেছি। কোরবানির সময় যাতে দুম্বার সরবরাহ বাড়ে, সেজন্য বাণিজ্যিকভাবে খামার বিস্তৃত করতে চাই।”


উদ্যোক্তা জাহিদের বিশ্বাস, প্রান্তিক পর্যায়ে দুম্বা ছড়িয়ে দেওয়া গেলে ভবিষ্যতে দেশে দুম্বার চাহিদা ও বাজার আরও সমৃদ্ধ হবে। যথাযথ পরিকল্পনা ও পরিচর্যা থাকলে দুম্বা খামার গড়ে তোলা এক লাভজনক উদ্যোগ হতে পারে।


কালের সমাজ//এসং//র.ন

Side banner
Link copied!