ঢাকা শনিবার, ৩১ মে, ২০২৫, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ব্যাংক খাতের উন্নয়নে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকা

তারিক আফজাল.ব্যাংকার ও অর্থনীতিবিদ মে ২৭, ২০২৫, ০৭:২৫ পিএম ব্যাংক খাতের উন্নয়নে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকা

সমসাময়িক, ছয়টি ব্যাংক একীভূত করণের সিদ্ধান্ত বহুল প্রতীক্ষিত এক সূচনা।

নোবেল বিজয়ী মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা, বিজ্ঞ অর্থনীতিবিদ ও গ্রামীণ ব্যাংকের সার্থক প্রতিষ্ঠাতা, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সম্মানিত গভর্নর, প্রথিতযশা অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকের প্রাক্তন চেয়ারম্যানদের সমীপে আবেদন-

বিগত দিনের অভিজ্ঞতার আলোকে ও বাস্তবতাকে ভরসা করে একান্ত করণীয় বিষয়গুলো পর্যালোচনা প্রয়োজন বিধায় আমার ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা।

বিগত দিনে খেলাপি ঋণের বৃদ্ধি, মন্দ ঋণ সত্ত্বেও নতুন ঋণ প্রদানের প্ররোচনা, বিচারের অভাব ও নির্ধারিত সাজার বাস্তবায়ন ক্রমশ ব্যাংক খাতকে দুর্বল ও অসহায় করে তুলেছে। মামলা ও সাজা ভোগি শুধুই ব্যাংকার ও সাজার আড়ালে থেকেছে কতিপয় দুর্নীতিগ্রস্ত পর্ষদ বা ব্যক্তিবর্গ।

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিচারবিরূপ সমাজে অগ্রগামী ছিলো খেলাপির স্বর্গ ও প্রখর প্রতাপ।

ঢাকা সহ সকল বিভাগে অর্থ ঋণ আদালতের অনুপস্থিতি, বিচারকের অভাব, রাজনৈতিক প্রভাব ও অধঃস্তন আদালতের দুর্নীতি ঋণ খেলাপির মদদ দাতা।

বর্তমানে বাংলাদেশে অর্থঋণের বিচারাধীন মামলা শত শত। আজও কেন্দ্রীয় ব্যাংক, আইন মন্ত্রণালয় ও বিচার বিভাগের মধ্যে কোনও সমন্বয় দৃষ্টিভূত নয়, যা হতাশাজনক ও দুর্ভাগ্যজনক।

ব্যাংক একীভূতকরণ হয়তো গ্রাহক আমানতের নিরাপত্তা দেবে, কিন্তু ঋণ প্রদান ও ঋণ আদায়ের লক্ষ্যে নির্দেশনা, খেলাপি ঋণের বিচার ও গ্রাহক আমানতের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা কে দেবে?

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জরিপ মতে কিছু ব্যাংকে আমানত নিরাপদ – বিষয়টি জটিল কারণ কেন্দ্রীয় ব্যাংক সকল ব্যাংকের পিতা। সকল ব্যাংকের সমান নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্তব্য, কোনও বিশেষ ব্যাংকের নয়।

ব্যাংকিং সামগ্রিক অর্থনীতির অঙ্গ, দেশের ৬০টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান দেখভালের গুরুদায়িত্ব কেন্দ্রীয় ব্যাংকের, তাই ভবিষ্যৎ আন্তর্জাতিক উদ্যোক্তা অর্জনের পরিকল্পনা এখনই প্রয়োজন। খেলাপি ঋণের সময়োচিত বিচার ও সাজা, দুর্নীতিমুক্ত সমাজ ও সরকার ও বিচার বিভাগের আন্তরিকতা আগত উদ্যোক্তার আগমনকে স্বাগত জানাবে।

কৃষি ঋণ, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ও নারী উদ্যোক্তার জাগরণ দীর্ঘমেয়াদি সুফল আনবে ও মন্দ ঋণের প্রসার প্রতিহত করবে।

ধারাবাহিক গতিতে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা নিয়মিত নীতি অনুসরণ করলে ব্যাংকের সঠিক কার্য পরিচালনা সম্ভব হবে।

গ্রামীণ ব্যাংক স্বার্থকতার এক অন্যন্য উদাহরণ, দারিদ্র্য বিমোচন, নতুন উদ্যোক্তার আগমন ও ঋণপরিশোধ সাফল্য আজ এক আন্তর্জাতিক শিক্ষার বিষয়। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য শিক্ষালয়ে এ প্রসারিত।

বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিকট প্রত্যাশা, একীভূত করণের পরবর্তীতে অনুরূপ কার্যাবলী নিশ্চিত করা ও কার্যবিধির যত্নশীল নিরীক্ষা চলমান থাকবে বলে আশা রাখি।

খেলাপি ঋণের প্রকৃত বিচার সাধারণ গ্রাহক আশা করে, মাননীয় আদালত তা নিশ্চিত করবেন বলে আশা রাখি ও উন্নয়ের পথে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবেন বলে কামনা করি।

পরিশেষে, ব্যাংকার ও গ্রাহক সঠিক নীতি অনুসরণ করবেন ও দেশের অর্থনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ করবেন। সকলের মঙ্গল কামনা করি ও উন্নয়নের অপেক্ষায় রইলাম। সবার উপরে দেশ।

লেখক-তারিক আফজাল.ব্যাংকার ও অর্থনীতিবিদ

 

কালের  সমাজ//এ.স//এ.জে

Side banner
Link copied!