প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফী সিদ্দিকী বলেছেন, বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেপজা) শ্রম ও পরিবেশগত মানদণ্ডে একটি উৎকর্ষতার প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে বেপজার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি সোমবার ‘শ্রম সংস্কার (২০২৫-২০২৭)’ বিষয়ক দুই বছর মেয়াদি কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বেপজা ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)-র মধ্যে লেটার অব ইন্টেন্ট স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
লুৎফী সিদ্দিকী বলেন, বেপজার অধীনস্থ ইপিজেডগুলো উচ্চ মানসম্পন্ন শ্রম পরিবেশ, শ্রমিক কল্যাণ এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থার জন্য পরিচিত, যা তাদেরকে অনুসরণযোগ্য মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
তিনি জানান, ইপিজেড শ্রমিকরা সাধারণত ইপিজেড-বহির্ভূত শ্রমিকদের তুলনায় ৩০-৪০ শতাংশ বেশি মজুরি ও উন্নত সুবিধা পান। এছাড়াও তিনি কর্মপরিকল্পনার সহযোগিতামূলক মনোভাবের প্রশংসা করে বলেন, এতে শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিতকরণ, আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ শ্রম পরিবেশ তৈরি এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সহযোগিতা বৃদ্ধির সুযোগ তৈরি হবে।
অনুষ্ঠানে বেপজার পক্ষে স্বাক্ষর করেন নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান (বিএসপি, এনডিসি, পিএস) এবং আইএলও-র পক্ষে স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মিঃ তুওমো পৌটিয়ানেন।
চুক্তির লক্ষ্য হচ্ছে ইপিজেডসমূহে শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা, সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং একটি নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ কর্মপরিবেশ তৈরি করা।
বক্তব্যে বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, “এই কর্মপরিকল্পনা শ্রম মান উন্নয়ন, শ্রমিকদের অধিকার সংরক্ষণ এবং নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করবে। এটি জাতীয় কর্মপরিকল্পনা (NAP) ও জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল (NSSS)-এর সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ, যা শালীন কাজ এবং সামাজিক সংলাপকে উৎসাহিত করে।”
তিনি আরও বলেন, “এই উদ্যোগ আন্তর্জাতিক ক্রেতা ও বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াতে সহায়ক হবে, যা দেশের রপ্তানি ও শিল্প খাতের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে একটি টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।”
আইএলও-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর মিঃ তুওমো পৌটিয়ানেন বলেন, “আজকের এই অংশীদারিত্বের মাধ্যমে আমরা তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা আরও জোরদার করছি—শ্রম প্রশাসন, দায়িত্বশীল ব্যবসায়িক আচরণ ও কর্মসংস্থান আঘাত প্রকল্প (EIS)।”
তিনি জানান, বিভিন্ন ইপিজেড পরিদর্শনের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা, শ্রমিকদের অধিকার, শিশু যত্ন ও স্বাস্থ্যসেবার মতো মৌলিক বিষয়গুলো ইতোমধ্যেই বেপজার আওতাধীন এলাকাগুলোতে প্রতিষ্ঠিত।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, “এই চুক্তি ইতিবাচক অনুশীলনগুলোকে আরও সুসংগঠিত করবে এবং বৃহত্তর সরকারি নীতির সঙ্গে একীভূত করতে সহায়তা করবে।”
কালের সমাজ//র.ন
আপনার মতামত লিখুন :