ঢাকা সোমবার, ৩০ জুন, ২০২৫, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ক্ষুধার্ত ত্রাণপ্রার্থীসহ আরও ৭২ জন নিহত

কালের সমাজ | আন্তর্জাতিক ডেস্ক জুন ৩০, ২০২৫, ১০:৪৭ এএম গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ক্ষুধার্ত ত্রাণপ্রার্থীসহ আরও ৭২ জন নিহত

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের টানা হামলায় প্রাণহানির সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান ও স্থল হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৭২ জন ফিলিস্তিনি, যাদের মধ্যে রয়েছেন খাদ্য সহায়তার জন্য অপেক্ষমাণ ত্রাণপ্রার্থীরাও।


রোববার (২৯ জুন) রাতে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়। গাজায় অবস্থানরত মেডিকেল সূত্রগুলোর বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, এদিন ভোর থেকে গাজা শহর ও উত্তরের বিভিন্ন এলাকায় ইসরায়েলের টানা বোমা হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৪৭ জন।


আল জাজিরার গাজা প্রতিনিধি মুয়াত আল-কালহুত জানান, গাজা শহরের জেইতুন, সাবরা ও আল-জাওইয়া বাজারে একাধিক হামলার পর আহতদের ঢল নামে উত্তর গাজার আল-আহলি হাসপাতালে। হাসপাতালে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সামগ্রী বা বেড না থাকায় অনেককে মেঝেতেই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। শিশুরাও আক্রান্তদের মধ্যে রয়েছে।


তিনি আরও জানান, পূর্ব গাজায় লিফলেট ফেলে বাসিন্দাদের দক্ষিণে চলে যেতে বলছে ইসরায়েলি বাহিনী। তবে সেই সতর্কতার পরপরই শুরু হচ্ছে তীব্র হামলা, এতে সাধারণ মানুষের প্রাণহানি বাড়ছে।


রোববার নিহতদের মধ্যে পাঁচজন ফিলিস্তিনি ছিলেন, যারা রাফাহর উত্তরে একটি খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে সহায়তা নিতে গিয়েছিলেন। বিতরণ কেন্দ্রটি পরিচালনা করছে ‍‍`গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)‍‍`—যা যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সহায়তায় পরিচালিত বলে জানানো হয়েছে।


গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানায়, গত মে মাসের শেষদিক থেকে জিএইচএফ সহায়তা দেওয়া শুরু করলে, সেই সময় থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রায়শই বিতরণকেন্দ্রের আশপাশে গুলি চালায়। এতে এখন পর্যন্ত ৫৮০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন প্রায় চার হাজার।


অন্যদিকে গাজায় ভয়াবহ মানবিক সংকট ও দুর্ভিক্ষের প্রভাব আরও প্রকট হচ্ছে। গাজা শহরের একটি হাসপাতালে কাজ করা অস্ট্রেলীয় স্বেচ্ছাসেবী নার্স ক্রিস্টি ব্ল্যাক জানান, অপুষ্টিজনিত কারণে শিশুদের মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। “নয় বা দশ বছর বয়সী শিশুরাও এখন দুই বছর বয়সী শিশুর মতো দুর্বল ও ক্ষীণদেহী,” বলেন তিনি।


তিনি আরও জানান, টানা বোমা হামলার ফলে সৃষ্ট ধুলা ও বিষাক্ত গ্যাসে শিশুরা শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে ভুগছে।


গাজা এখন মৃত্যু, অনাহার ও মানবিক বিপর্যয়ের এক নির্মম বাস্তবতায় বন্দি। নিরাপত্তাহীনতা ও খাদ্যাভাব মিলিয়ে গোটা উপত্যকাই যেন পরিণত হয়েছে মানবিক এক দুর্যোগে।


কালের সমাজ//র.ন

Side banner
Link copied!