ঢাকা রবিবার, ২৯ জুন, ২০২৫, ১৫ আষাঢ় ১৪৩২

শ্রীবরদীতে ‘ভূতুড়ে বিদ্যুৎ বিল’ নিয়ে গ্রাহকদের মাঝে ক্ষোভ

কালের সমাজ | সাফিজল হক তানভীর, শেরপুর প্রতিনিধি জুন ২৯, ২০২৫, ০১:৩৮ পিএম শ্রীবরদীতে ‘ভূতুড়ে বিদ্যুৎ বিল’ নিয়ে গ্রাহকদের মাঝে ক্ষোভ

শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলায় পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহকরা সম্প্রতি অস্বাভাবিক বিদ্যুৎ বিলের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। হঠাৎ করে কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়া বিলের কারণে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির গ্রাহকদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে।


স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, আগে মাসে গড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা বিল এলেও এখন অনেকের কাছে ১৫০০ থেকে ৩০০০ টাকা পর্যন্ত বিল পৌঁছেছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এই অঙ্ক পূর্বের চেয়ে তিন থেকে চারগুণ বেশি। এতে অনেক পরিবার নিত্যপ্রয়োজনীয় খরচে কাটছাঁট করতে বাধ্য হচ্ছেন।


বালুরচর গ্রামের একাধিক গ্রাহক জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কিছু মাঠকর্মী সঠিকভাবে মিটার রিডিং না নিয়ে অনুমাননির্ভর বিল করছেন। কেউ কেউ অভিযোগ করেন, ঘুষ ছাড়া সঠিক রিডিং নেওয়া হয় না। এর ফলে একদিকে যেমন বাড়তি বিলের বোঝা চাপছে, অন্যদিকে গ্রাহকদেরকে পড়তে হচ্ছে আর্থিক সমস্যায়।


রানীশিমুল ইউনিয়নের বাসিন্দা রাকিব হোসেন বলেন, “আমি প্রতি মাসে ৫০০ টাকার মতো বিল দিতাম। কিন্তু গত মাসে হঠাৎ ২৯৫০ টাকার বিল এসেছে। অথচ বাড়িতে বিদ্যুৎ ব্যবহারে কোনো পরিবর্তন হয়নি।”


একই অভিযোগ করেন গৃহবধূ রোজিনা বেগম। তিনি জানান, “আগে ৩০০-৪০০ টাকার মধ্যে বিল আসত। এখন ১২০০ টাকার ওপরে বিল আসছে। অভিযোগ করলে বলে, মিটার নষ্ট।”


ভুক্তভোগী নবাব মিয়া বলেন, “পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা না থাকায় সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছে। এমন ভূতুড়ে বিল না দিতে পেরে আমার সংযোগ ৯ মাস ধরে বিচ্ছিন্ন রয়েছে।”


এ বিষয়ে শ্রীবরদী পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “কিছু ক্ষেত্রে মিটার রিডিং না হওয়ায় বা ভুল হওয়ার কারণে সিস্টেম থেকে অনুমাননির্ভর বিল জেনারেট হয়েছে। তবে যেসব গ্রাহক অভিযোগ করেছেন, তারা আবেদন করলে তা যাচাই করে প্রয়োজনীয় সংশোধনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”


শ্রীবরদী জোনাল অফিসের ডিজিএম প্রকৌশলী সূর্য্য নারায়ণ ভৌমিক বলেন, “কারিগরি ত্রুটি এবং মিটার রিডারের ভুলের কারণে এমন ঘটনা ঘটতে পারে। অস্বাভাবিক বিল যেসব ক্ষেত্রে এসেছে, সেসব গ্রাহক আবেদন করলে বিল যাচাই করে সংশোধনের ব্যবস্থা করা হবে।”


সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দ্রুত সমাধান না হলে এই পরিস্থিতি পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা নষ্ট করবে এবং এলাকায় বড় ধরনের অসন্তোষ তৈরি হতে পারে। তাই মিটার রিডিংয়ে স্বচ্ছতা, প্রযুক্তির ব্যবহার এবং নিয়মিত তদারকির দাবি জানিয়েছেন গ্রাহকরা।


কালের সমাজ//র.ন

Side banner
Link copied!