ঢাকা সোমবার, ৩০ জুন, ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২

শরীয়তপুরে ‘ভুতুড়ে’ বিদ্যুৎ বিল নিয়ে গ্রাহকদের ক্ষোভ

কালের সমাজ | শরীয়তপুর প্রতিনিধি জুন ২৯, ২০২৫, ০৭:০৯ পিএম শরীয়তপুরে ‘ভুতুড়ে’ বিদ্যুৎ বিল নিয়ে গ্রাহকদের ক্ষোভ

শরীয়তপুরে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জুন মাসের বিদ্যুৎ বিল নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন সাধারণ গ্রাহকরা। অনেকেই অভিযোগ করছেন, মিটার না দেখে মনগড়া বিল তৈরি করা হচ্ছে, যার ফলে গত মাসের তুলনায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বেশি বিল এসেছে।

 

শরীয়তপুর সদরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় সাধারণ গ্রাহকদের দাবি, বিদ্যুৎ ব্যবহার অপরিবর্তিত থাকলেও হঠাৎ করে দ্বিগুণ বা তিনগুণ পর্যন্ত বিল এসেছে।

এক গ্রাহক ও স্থানীয় সাংবাদিক রাব্বি জানান, তার মাসিক বিদ্যুৎ বিল সাধারণত ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা হয়ে থাকে, অথচ এবার এসেছে ৬,২০০ টাকা। অথচ তিনি ব্যবহার করেন মাত্র দুটি বাতি, একটি ফ্যান ও একটি ছোট ফ্রিজ।

 

ভোজেশ্বর এলাকার ব্যবসায়ী নাসির খান বলেন, “আমি একটি ছোট ব্যবসা করি। মাসে গড়ে ৪০০-৫০০ টাকা বিল আসত, এবার এসেছে ২,২০০ টাকা। বিদ্যুৎ ব্যবহারে কোনো পরিবর্তন হয়নি, তবুও এতো বাড়তি বিল আসল কীভাবে?” তিনি এ বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেন।

 

চিকন্দী থেকে আসা আরেক গ্রাহক জানান, সাধারণত তার বিল ৮০০ থেকে ৯০০ টাকার মধ্যে থাকলেও এবার বিল এসেছে প্রায় ১,৮০০ টাকা।

 

আব্দুল সমাদ বয়াতি নামে এক গ্রাহক বলেন, “আমি ঢাকায় চাকরি করি, গ্রামে আমার পরিবার থাকে। মাসে ৩০০-৪০০ টাকার বিল দিতাম, এবার এসেছে ১,১০০ টাকা। এভাবে চলতে থাকলে সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠবে।”

 

এ অবস্থায় অনেক গ্রাহক অভিযোগ নিয়ে অফিসে গেলেও সমাধান পাচ্ছেন না বলে জানান। কেউ কেউ বলছেন, মিটার রিডাররা বাড়িতে না গিয়ে অফিসেই বিল তৈরি করছেন, যার ফলে বিলের পরিমাণ অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাচ্ছে।

 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এক মিটার রিডার জানান, “সারা বছরের বিল ঘাটতি জুন মাসে পূরণ করার জন্য মাঝে মাঝে উপর থেকে মৌখিকভাবে বাড়তি বিল তোলার নির্দেশ আসে।”

 

তবে শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (জি.এম) আলতাফ হোসেন বলেন, “আমাদের কাছে ‘ভুতুড়ে বিল’ বলে কিছু নেই। দুই-একজন গ্রাহক বিল সংক্রান্ত অভিযোগ করেছেন, আমরা যাচাই করছি। প্রযুক্তিগত ত্রুটি বা সফটওয়্যার সমস্যার কারণে কিছু বিলের অস্বাভাবিকতা দেখা দিতে পারে।”

 

তবে স্থানীয়দের অভিযোগের সংখ্যা ও ধরন থেকে বোঝা যাচ্ছে, সমস্যাটি সামান্য নয় বরং ব্যাপক। এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত সমাধানের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।


কালেরসমাজ//র.ন

Side banner
Link copied!