সম্ভাবনায় ভরপুর হলেও উন্নয়নের দৌড়ে এখনো পিছিয়ে পিরোজপুর। ভূমি মন্ত্রণালয়ের শ্রেণিবিন্যাস অনুযায়ী জেলাটি এখনো ‘গ’ শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত। ভৌগোলিক অবস্থান, সম্পদ ও জনবল— সবদিক থেকেই এগিয়ে থাকা সত্ত্বেও কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি না আসায় হতাশ স্থানীয়রা।
পিরোজপুরের মানুষ বলছেন, দূরদৃষ্টিসম্পন্ন পরিকল্পনা, কার্যকর প্রশাসনিক নেতৃত্ব ও উন্নয়নমনস্ক দৃষ্টিভঙ্গির অভাবেই জেলাটি পিছিয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে অবকাঠামো, শিল্পায়ন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে সমন্বিত উদ্যোগের অভাবে পিরোজপুরের সম্ভাবনা দিনদিন ক্ষীণ হয়ে পড়ছে।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পজেটিভ পিরোজপুর এর সভাপতি মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, “আমরা ভাবতাম পিরোজপুর হবে দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নের মডেল, কিন্তু আজও আমরা ‘গ’ শ্রেণীর জেলা। এজন্য আমি দ্বায়ী করি আমাদের রাজনীতিবিদের স্বদিচ্ছার অভাব এবং উদাসীনতা। তারা শুধু ক্ষমতা ব্যবহার করে নিজ ও পরিবারের উন্নতি সাধন করেছেন, এটা খুব কষ্ট দেয়।”
তবে বর্তমান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফুল আলম খান ইতিমধ্যেই শহরের সৌন্দর্য বর্ধনে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ শুরু করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য— ভারনী খাল পুনঃখনন, বেকুটিয়ার কমুরমারা প্রান্তে ডলফিন পয়েন্ট, পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে যাত্রী ছাউনি, পাবলিক টয়লেট, হার্ট পয়েন্ট, সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের সিগনেচার রোড, জেলা জজের বাসভবনের সামনে প্রবীন পার্ক, উপজেলা পুকুরের চারিপাশে দৃষ্টিনন্দন লাইটিংসহ ওয়াকিং স্পেসসহ নানা উন্নয়নমূলক পরিকল্পনা।
সাধারণ নাগরিকদের ধারণা, এই ধরনের উদ্যোগ ও কাজের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে অচীরেই পিরোজপুরকে ‘গ’ থেকে ‘ক’ শ্রেণীর জেলা হিসেবে পরিচিত করা সম্ভব। তবে ভবিষ্যতে যারা জনপ্রতিনিধি হবেন তারা যেন পূর্বের ভুলগুলোকে শিক্ষা নিয়ে এলাকার উন্নয়নে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করেন তাহলেই এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।
স্থানীয় তরুণ প্রজন্ম এখন পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখছে। তাদের কণ্ঠে শোনা যায় একটাই আহ্বান—
“নিজ জেলা, নিজের গর্ব — পিরোজপুর হোক অগ্রগতির প্রতীক।”
একাত্ম প্রচেষ্টা, নেতৃত্বের দায়বদ্ধতা এবং ইতিবাচক মনোভাব থাকলে পিরোজপুর সত্যিই দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নের নতুন আলোকবর্তিকা হয়ে উঠতে পারে।
কালের সমাজ/ না. তা./ সাএ
আপনার মতামত লিখুন :