দেশের অন্যতম মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান বিকাশ প্রতিদিন গ্রাহকদের লেনদেন থেকে শত শত কোটি টাকা আয় করলেও জেলা পর্যায়ে সেবা কাঠামোতে চরম অব্যবস্থাপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এরই স্পষ্ট উদাহরণ পিরোজপুর জেলা পরিষদের বিপরীতে অবস্থিত বিকাশের গ্রাহক সেবা কেন্দ্র। ছোট একটি দোকানঘরে পরিচালিত এই সেবাকেন্দ্রে প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে বহু মানুষ সেবা নিতে এসে মানবেতর ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পর্যাপ্ত স্থান ও বসার ব্যবস্থা না থাকায় মহিলা, বৃদ্ধ ও অসুস্থ ব্যক্তিরা রাস্তায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। অনেককে ক্লান্ত হয়ে রাস্তায় বা দোকানের সামনে মাটিতে বসে থাকতে দেখা যায়। রোদ, বৃষ্টি কিংবা শীত—সব অবস্থায় ভুক্তভোগীদের একমাত্র প্রতীক্ষাস্থল রাস্তা।
গ্রাহকরা অভিযোগ করে বলেন, “বিকাশ দেশের অন্যতম লাভজনক প্রতিষ্ঠান। প্রতিদিন শত শত কোটি টাকা লেনদেন হয়, কিন্তু গ্রাহকদের জন্য একটি উন্নতমানের, বড়, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সার্ভিস সেন্টার পর্যন্ত দেয় না। আমরা দূর-দূরান্ত থেকে এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকি—এটাই আমাদের বাস্তবতা।”
ভোগান্তির পাশাপাশি গ্রাহকরা আরও অভিযোগ করছেন, ব্র্যাক ব্যাংকের প্রতিষ্ঠান বিকাশ গ্রাহকের নিজের টাকা উত্তোলনে হাজারে ১৮ টাকা ৫০ পয়সা হারে চার্জ কেটে নেয়। গ্রাহকদের প্রশ্ন—নিজের জমাকৃত টাকা তুলতে গিয়ে এমন উচ্চ হারে ফি আদায়ের বৈধতা ব্যাংকিং নীতিমালায় কতটা রয়েছে?
ভুক্তভোগীরা বলেন, “ব্যাংকে টাকা রাখলে উত্তোলনে এত চার্জ নেই। কিন্তু বিকাশে টাকা রাখলে হাজারে ১৮.৫০ টাকা কেটে নিতে হয়—এটা কোন যুক্তিতে? এটা কি গ্রাহককে শাস্তি দেওয়ার মতো নয়?”
সাধারণ মানুষের দাবি, বিকাশের উচিত চার্জ কমানো এবং গ্রাহকবান্ধব পরিবেশ তৈরি করা।
স্থানীয় সচেতন মহল, ভুক্তভোগী গ্রাহক এবং বিভিন্ন পেশাজীবী মনে করেন—পিরোজপুর জেলা শহরে বিকাশের সেবাকেন্দ্রটি অপর্যাপ্ত, অস্বাস্থ্যকর ও অব্যবস্থাপনায় ভরা।
তাদের দাবি—জেলার মানুষের সুবিধার জন্য বিকাশ কর্তৃপক্ষের দ্রুত একটি বৃহৎ, আধুনিক, সুশৃঙ্খল ও এয়ারকন্ডিশনযুক্ত গ্রাহকসেবা কেন্দ্র স্থাপন করা জরুরি।
নানা ভোগান্তি ও প্রশ্নের মুখে বিকাশ কর্তৃপক্ষের নিকট গ্রাহকদের একটাই প্রত্যাশা—
“টাকা নিন, সেবা দিন; মানুষের কষ্ট কমান।
কালের সমাজ/ সাএ
আপনার মতামত লিখুন :