বিশ্বব্যাপী প্রতি ৪০ সেকেন্ডে একজন মানুষ আত্মহত্যা করছেন এবং বছরে প্রায় ৮-১০ লাখ মানুষ জীবনত্যাগ করছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশের অংশ প্রায় ২.৬%, যেখানে প্রতি বছর প্রায় ১৫ হাজার জন আত্মহত্যা করছেন। ১৫-৩০ বছর বয়সী তরুণদের মধ্যে এই হার বেশি। সম্প্রতি আত্মহত্যার ঘটনা বাড়ছেই।
ইউএস-বাংলা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ব্রিগে. জেনারেল মো. আজিজুল ইসলাম (অব.) বলেন, “আত্মহত্যা প্রতিরোধযোগ্য, তবে এর জন্য প্রয়োজন সমন্বিত সচেতনতা—ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র পর্যায়ে।”
অধ্যাপক আজিজুল ইসলাম আরও জানান, আত্মহত্যার মূল কারণ মনোরোগ বা মানসিক অসুস্থতা (৭০-৯০%)। এছাড়া পারিবারিক কলহ, সামাজিক অস্থিরতা, সহিংসতা, বেকারত্ব, মাদকাসক্তি, সম্পর্ক বা বিবাহবিচ্ছেদ, সাইবার বুলিং—এগুলোও ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
আত্মহত্যা প্রতিরোধে কিছু প্রস্তাবিত পদক্ষেপ তুলে ধরেছেন অধ্যাপক:
ঝুঁকিপ্রবণ ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে যত্ন নেওয়া। যেমন একাকী থাকা, আত্মহত্যার হুমকি দেওয়া, মনোরোগে ভোগা বা নিজের ক্ষতি করা।
মনোরোগের চিকিৎসা নিশ্চিত করা। যেমন ডিপ্রেশন, সিজোফ্রেনিয়া, মাদকাসক্তি।
মানসিক চাপ মোকাবেলায় সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। শিশুকাল থেকে স্বাবলম্বী ও সুশৃঙ্খল মানুষ গড়ে তোলা।
নিজের মনের যত্ন নেওয়া ও মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব দেওয়া।
সমাজকে সহিংসতা, কলহ ও অস্থিরতা থেকে মুক্ত রাখতে সৃজনশীল কাজে উৎসাহিত করা।
রাষ্ট্রকে মানসিক স্বাস্থ্য ও সমাজ সচেতনতায় দায়িত্বশীল ভূমিকা নিতে হবে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বুলিং প্রতিরোধ, মাদকবিরোধী কার্যক্রম, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে মনোযোগ দেওয়া।
পাঠ্যক্রমে বিভিন্ন পর্যায়ে মনোরোগ সম্পর্কিত বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা।
অধ্যাপক আজিজুল ইসলাম বলেন, “আসুন সকলে মিলে আত্মহত্যা প্রতিরোধে সচেষ্ট হই, নিজের, সন্তানের, পরিবার ও সমাজের মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিই এবং সুন্দর পরিবার ও সমাজ গড়ে তুলি।”
আপনার মতামত লিখুন :