বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) গত আসরেও টিভি সম্প্রচার স্বত্ব বিক্রি হয়েছিল ২৮ কোটি টাকায়। ২০১৫ সাল থেকে বিপিএলের খেলা সম্প্রচার স্বত্ব বিক্রি করে ভালো আয় করছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। প্রতিবছর ২৮ থেকে ৩২ কোটি টাকা পাওয়া গেছে।
জানা গেছে এবার সম্প্রচার স্বত্ব বিক্রি করা হয়েছে ১২ কোটি টাকায়! এই টাকার জন্যও কম ঝামেলা পোহাতে হয়নি বিসিবির মার্কেটিং বিভাগকে।
বিসিবির একজন পরিচালক জানান, এই টাকার জন্যও খেলা সম্প্রচার স্বত্ব পাওয়া মিডিয়াকমের সঙ্গে সমঝোতা করতে হয়েছে।
এক বছরের ব্যবধানে অর্ধেকের কম টাকায় বিপিএলের খেলা সম্প্রচার স্বত্ব বিক্রি করার কারণ জানতে চাওয়া হলে বিসিবি মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন জানান, দেশের সার্বিক অর্থনীতির নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে খেলার মার্কেটে। বিপিএলে সেটা একটু বেশিই পড়েছে।
বিপিএলের দ্বাদশ আসর থেকে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে লভ্যাংশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিবি। টিকিট বিক্রি ও গ্রাউন্ডস রাইট বিক্রি করে যে আয় হবে, তা থেকে ৩০ শতাংশ ছয় ফ্র্যাঞ্চাইজিকে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিল বিসিবি। বিপিএলের মন্দার বাজারে সেই লভ্যাংশের ভাগ এক কোটি টাকা না হওয়ার সম্ভাবনা আছে। গত বছরের মতো এবার ১৩ কোটি টাকার টিকিট বিক্রি নাও হতে পারে। গ্রাউন্ডস রাইটের মূল্যও কমে গেছে।
খেলা সম্প্রচার, গ্রাউন্ডস রাইট, টিকিট ও ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি থেকে আয় করে বিসিবি। আগে ৭০ কোটি টাকা বাজার থেকে তোলা গেলেও এবার ৩৫ থেকে ৪০ কোটি টাকার বেশি হবে না বলে মনে করা হচ্ছে। এই টাকা থেকেই টিভি প্রডাকশন ও ইভেন্ট ব্যবস্থাপনার ব্যয় নির্বাহ করা হয়। খেলার বাজার মন্দা হওয়ায় আয়-ব্যয়ের মধ্যে ভারসাম্য রাখা কঠিন হবে বলে মনে করেন বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের কর্মকর্তারা।
২০২৪ সালে দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের প্রভাব ক্রিকেট মার্কেটিংয়ে খুব বেশি পড়েনি। এ কারণে বিপিএলের মতো টি২০ ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ আয়োজন করতে পেরেছিলেন সাবেক সভাপতি ফারুক আহমেদ। ক্রিকেটের বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে থাকে ২০২৫ সালের শুরু থেকে। জাতীয় দলের বেশ কয়েকটি সিরিজ বিক্রি হয়েছে কম টাকায়। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত টেস্ট সিরিজের সম্প্রচার স্বত্ব বিক্রি করতে পারেনি বিসিবি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে ও টি২০ সিরিজ বিক্রি করতে হয়েছে আলোচনার মাধ্যমে। তিন কোটি টাকায় বিক্রি করা হয়েছিল সিরিজটি।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত টেস্ট ও টি২০ সিরিজের মূল্য ছিল তিন কোটি টাকার কিছুটা বেশি। এই তিনটি সিরিজ আয়োজন করে বিসিবি আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারেনি বলে জানা গেছে। বিপিএলের দ্বাদশ আসর আয়োজন করে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা দেখেন না কর্মকর্তারা। ক্রিকেটের বাজার ভালো না হওয়ায় ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোও স্পন্সর সংগ্রহ করতে পারছে না। সাধা মালের আধা দামের মতো দলগুলোকে প্ল্যাটিনাম ও গোল্ড স্পন্সর নিতে হচ্ছে সামান্য টাকায়। এ অবস্থায় দলের ব্যয় নির্বাহ করতে গিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে হিমশিম খেতে হতে পারে বলে মনে করেছেন ক্রিকেট-সংশ্লিষ্টরা।
কালের সমাজ/এসআর


আপনার মতামত লিখুন :