বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি অনিশ্চিত থাকায় এখনই বড় বিনিয়োগের প্রত্যাশা করা অবাস্তব। তিনি বলেন, “আর্থিক খাতে কিছুটা স্থিতিশীলতা এলেও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসেনি। এই পরিবেশে কেউ বিনিয়োগে ঝাঁপিয়ে পড়বে বলে ভাবা কাল্পনিক।”
রোববার (১০ আগস্ট) রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ৩৬৫ দিন’ শীর্ষক সংলাপে গভর্নর এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিপিডির সম্মানীয় ফেলো প্রফেসর মুস্তাফিজুর রহমান। প্রধান অতিথি ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, “পাইপলাইনে কিছু বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে, তবে সময় লাগবে। সামনে নির্বাচন, তাই বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও অপেক্ষা করবে। আমদানি স্বাভাবিক থাকলেও পুঁজি যন্ত্রপাতি আমদানি কমেছে। প্রশ্ন হচ্ছে—এমন পরিবেশে বিনিয়োগ করবে কে?”
তিনি জানান, বাংলাদেশ দুই বড় চ্যালেঞ্জের মুখে—সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা ও সংস্কার প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়া, যাতে ভবিষ্যতে যে সরকারই আসুক তা অব্যাহত রাখতে পারে।
সিপিডির সম্মানীয় ফেলো মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার সময় অর্থনীতি সংকটে ছিল—রিজার্ভ কমছিল, মুদ্রার মান কমছিল, মুদ্রাস্ফীতি ও বেকারত্ব বাড়ছিল। এক বছর পর কিছু অগ্রগতি হলেও চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে।
বিশেষ অতিথি বিএনপি নেতা ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “মানিলন্ডারিং বন্ধ হওয়ায় রেমিট্যান্স ও রপ্তানি বেড়েছে। তবে স্বৈরাচারের বাজেট অব্যাহত না রেখে সামাজিক খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত ছিল।”
বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল সরকারের নীতিগত সমালোচনা করে বলেন, “৩৬৫ দিনে টেক্সটাইল খাতে কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন হয়নি। কর বাড়ানো, কাঁচামালে শুল্ক, বিদ্যুৎ-গ্যাস সংকট ও চাঁদাবাজি ব্যবসাকে বিপর্যস্ত করেছে।”
বাসদ নেতা রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, “আগের সরকারকে সমালোচনা করলে স্বাধীনতাবিরোধী বলা হতো, এখন ফ্যাসিবাদের দোসর বলা হয়। একইভাবে রাষ্ট্র চালিয়ে ভিন্ন ফল আশা করা যায় না। বছরে ১ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার চাঁদাবাজি অর্থনীতি ও সমাজে ভয়াবহ প্রভাব ফেলছে।”
কালের সমাজ//র.ন
আপনার মতামত লিখুন :