ঢাকা সোমবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৫, ২৬ কার্তিক ১৪৩২

গৌরীপুরে শীষ প্রতীকের দুই গ্রুপে পাল্টাপাল্টি হামলা

গৌরীপুর উপজেলা প্রতিনিধি, ময়মনসিংহ | নভেম্বর ১০, ২০২৫, ১২:০৮ পিএম গৌরীপুরে শীষ প্রতীকের দুই গ্রুপে পাল্টাপাল্টি হামলা

গৌরীপুরে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের অফিসে হামলা-ভাংচুর-অগ্নিসংযোগ, মৃত্যু-১, আহত অর্ধশত।


ময়মনসিংহ-৩ গৌরীপুর আসনের ধানের শীষের নমিনী ইঞ্জিনিয়ার এম ইকবাল হোসাইন ও মনোনয়ন বঞ্চিত আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণ গ্রুপের মাঝে হামলা-ভাংচুরের ঘটনা ঘটে রোববার (৯ নভেম্বর/২৫)। হামলায় বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের অফিস ভাংচুর, জিনিসপত্রে অগ্নিসংযোগের ঘটনা শহর জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হামলায় উভয়পক্ষের কমপক্ষে ৫০জন আহত হন। তাদের মধ্যে ময়মনসিংহ উত্তর জেলা ছাত্রদলের সদস্য আবিদের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। 


এ প্রসঙ্গে গৌরীপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেবাশীষ কর্মকার জানান, হামলা-ভাংচুরের ঘটনা এখন পর্যন্ত (রাত ৯টা) কেউ অভিযাগ দায়ের করে নাই। আবিদ নামের একজনের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গেছে। তবে তার শরীরে আঘাতে কোনো চিহ্ন নেই। লাশের ময়নাতদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।


রোববার গৌরীপুর সরকারি কলেজ হোস্টেল মাঠে উপজেলা-পৌর বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের ব্যানারে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উদযাপন ও ধানের শীষের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা ছিলো। এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ময়মনসিংহ-৩ গৌরীপুর আসনের ধানের শীষের নমিনী ইঞ্জিনিয়ার এম ইকবাল হোসাইন। একই দিনে একই দিবস নিয়ে ধানমহালে মহিলা দলের আলোচনা ছিলো। এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণ। এ নিয়ে দু’পক্ষের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছিলো। বিকালে হামলা-ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। 
এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণ। তিনি বলেন, জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ২-৩ হাজার মহিলা নিয়ে পূর্বঘোষিত শান্তিপূর্ণ সমাবেশ চলছিলো। ওই অনুষ্ঠানের যিনি প্রধান অতিথি (ইঞ্জিনিয়ার এম ইকবাল হোসাইন) তার নির্দেশনায় অর্তকিতভাবে এ সমাবেশে হামলা করা হয়েছে। হামলায় আমার স্ত্রী সাইদা মাসরুরসহ অর্ধশত নেতাকর্মী আহত হয়েছে। ৩০-৪০টি মোটর সাইকেল ভাংচুর করা হয়েছে। বিএনপি অফিস ও  সমাবেশের চেয়ার, টেবিলসহ সবকিছু ভেঙ্গে তছনছ করে দিয়েছে। এ ঘটনায় আমি সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে বিচার দাবি করছি। তিনি আরও বলেন, এইমাত্র শোনলাম একজন ছাত্রদল নেতা স্ট্রোক করে মারা গেছে। সেই মৃত্যুকে উদোরপিন্ডি বুদোর ঘাড়ে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। 


এ ঘটনায় স্থানীয় একটি হোটেলে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এম ইকবাল হোসাইন গ্রুপের নেতৃবৃন্দ। সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিবুল ইসলাম খান শহীদ জানান, শুক্রবার রাতে ময়মনসিংহ উত্তর জেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম পাপ্পুর ব্যক্তিগত অফিসের হিরণের ভাইসহ লোকজন হামলা করেছে। এ সমাবেশ পন্ড করতে তারা অস্ত্রেসন্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলার পরিকল্পনা করছিলো। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ৩৪টি রামদাসহ সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে ৪জনকে গ্রেফতার করে। এরপরে আমাদের সমাবেশ শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে নেতাকর্মীদের ওপর হিরণের লোকজন হামলা করেছে। এছাড়াও পৌর বিএনপির আহ্বায়ক আলী আকবর আনিছের বাসভবনে হামলা, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রমজান হোসেন খান জুয়েলের অফিসে ভাংচুর ও টিভি লুট, ময়মনসিংহ উত্তর জেলা যুবদলের সভাপতি শামছুল হক সামছুর অফিস, উত্তর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নুরুজ্জামান সোহেল ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের কার্যালয় ভাংচুর-হামলা ও জিনিসপত্র রাস্তায় এনে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। ১০টি মোটর সাইকেল ভাংচুর ও ১৫-২০জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। এ সময় শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবিতেও অগ্নি সংযোগ করা হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মহিলা সমাবেশে কারা হামলা করেছে আমরা জানি না। সে সময় আমরা মেটিংয়ে ছিলাম।

 

কালের সমাজ/ সাএ

 

Side banner

গ্রাম-গঞ্জ বিভাগের আরো খবর

Link copied!