গাজীপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্লাটফর্মের সাবেক সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর গাড়িতে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা।
রোববার (৪ মে) রাত ১০ টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বানে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া মোড়ে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডায়না চত্বরে সমবেত হন। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা।
এসময় শিক্ষার্থীরা “গাড়ির ভিতর হামলা কেন, ইন্টেরিম জবাব চাই ; আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ; ইসকনের কালো হাত, ভেঙে দাও পুড়িয়ে দাও; জেগেছেরে জেগেছে, ছাত্র সমাজ জেগেছে; ওয়ান টু থ্রি ফোর, আওয়ামী লীগ নো মোর, যুব লীগ নো মোর, ছাত্রলীগ নো মের” ইত্যাদি স্লোগান দেয়।
জানা যায়, এনসিপির সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্টে লেখেন- ‘হাসনাতের গাড়িতে ১০-১২ জন সন্ত্রাসী গাজীপুর এলাকায় হামলা করেছে। গাড়ির গ্লাস ভেঙে গিয়েছে, হাত রক্তাক্ত হয়েছে। আশেপাশে যারা আছেন হাসনাতকে প্রটেক্ট করুন।’ এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করে শিক্ষার্থীরা।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আজকের ঘটনা হত্যা করার উদ্যেশ্যে ঘটিয়েছে। একেক এক করে তিন বার হামলা হয়েছে, কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কেনো ব্যবস্থা নেয়নি। এদের বিচার না করায় স্বৈরাচার হয়ে ওঠেছে। এটা ভারতের এজেন্ডা বাস্তবায়নের প্রেসক্রিপশন ছাড়া আর কিছুই না। এরকম হত্যাকাণ্ড নতুন নয়, এটা অনেক আগের কৌশল। যারা দেশপ্রেমের কথা বলে তাদের এভাবে পরিকল্পিত হত্যা কা হয়েছে। ছাত্র সমাজ জেগে আছে।সুতরাং আপনারা ঘুমন্ত ভাববেন না। যতদিন পর্যন্ত আমাদের হৃদয়ে ভারত বিরোধী মনোভাব কিংবা আওয়ামী দোসরদের বিরুদ্ধে কথা বলবো ততদিন আমাদের দমিয়ে রাখার জন্য পাঁয়তারা করে যাচ্ছে। দ্রুত সন্ত্রাসীদের শাস্তির আওতায় আনার জন্য সরকারের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি।’
তারা আরও বলেন, ‘শুধু ইকোনমি বাড়িয়ে লাভ নাই, কারণ দুদিন পর এগুলো লুট হয়ে যাবে। কারণ গণহত্যাকারীদের এখনও বিচার করেননি। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না করে ইকোনমি বৃদ্ধি করে লাভ নাই। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ এবং ছাত্রলীগের বিচারের দাবি জানান তারা।’
ইবি শাখা সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, ‘জুলাই অভুত্থানের অগ্রনায়ক হাসনাত আবদুল্লাহর উপর সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। একটি দল বা গোষ্ঠীর আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধের কথা উঠলে হিংসা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী সিন্ডিকেটে দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখতে চাই। জুলাই বিপ্লবের স্প্রিরিট ভুলে গিয়ে ব্যক্তি পূজা ও ব্যক্তি স্বার্থে কাজ করে আমরা তা প্রতিহত করার জন্য প্রস্তুত। আমরা যখন গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসরদের বিচারের কথা বলছি, ঠিক একই সময়ে এক শ্রেণির লোক যারা আমাদের আন্দোলনের সাথে ছিল, তারা আমাদের অংশীদার কিন্তু তারা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে নাই। যদি তারা
গণহত্যা নিশ্চিতের জন্য জোর দাবি করে তাহলে তারা হয়তো ভোটে হেরে যেতে পারে। গণহত্যার বিচার না পর্যন্ত, বৈষম্যেবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাবে।
আজকে হাসনাতের ওপর যে হামলা হয়েছে, কালকে তো আমাদের উপর বা আপনার উপর হামলা হতে পারে। হাসনাতের যারা উপর যে হামলা করেছে অনতিবিলম্বে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এদেরকে যদি কঠোর হাতে দমন করতে না পারে, তাহলে বিপ্লবীরা যদি এভাবে মার খায় তাহলে জুলাই বিপ্লব আমাদের হাত ছাড়া হয়ে যাবে। সে জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
কালের সমাজ//এ.সং//র.ন
আপনার মতামত লিখুন :