চীনের বিখ্যাত বেইহাং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সেরা গ্র্যাজুয়েট অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছেন নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার তরুণ মেধাবী ছাত্র মো. তারিকুল ইসলাম (তাজ)। এ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অসাধারণ সাফল্যের জন্য তাকে এই মর্যাদাপূর্ণ সম্মাননা প্রদান করা হয়।
গত সোমবার (৩০ জুন) চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের হাইডিয়ান জেলার সুয়েইউয়ান লুতে অবস্থিত বেইহাং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ক্যাম্পাসে আয়োজিত সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ঝাও ওয়েই শেং তারিকুল ইসলামের হাতে এই অ্যাওয়ার্ড তুলে দেন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপ-পরিচালক প্রফেসর ঝাং ঝিহুই, আন্তর্জাতিক স্কুলের উপ-ডিন প্রফেসর উ সিয়াওজুন এবং তারিকুলের গবেষণা তত্ত্বাবধায়ক প্রফেসর সু ইউয়ান মিং।
আকর্ষণীয় বিষয় হলো, তারিকুল সেরা গ্র্যাজুয়েট অ্যাওয়ার্ড পাওয়ায় তার গবেষণা তত্ত্বাবধায়ক প্রফেসর সু ইউয়ান মিংকেও সেরা শিক্ষক অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। এতে একসঙ্গে ছাত্র-শিক্ষকের যুগল সাফল্য উদযাপন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
তারিকুল ইসলাম এর আগে চীনের হুনান প্রদেশের রাজধানী চাংশায় অবস্থিত চাংশা ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন। সেখানেও তিনি সেরা গ্র্যাজুয়েট অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন।
তারিকুলের গবেষণার মূল বিষয় ছিল বিমান নকশা, মনুষ্যবিহীন আকাশযান (ড্রোন), বৈদ্যুতিক উল্লম্ব অবতরণ যান, এরোডাইনামিক্স এবং মেশিন লার্নিং। বর্তমানে তিনি বেইজিংয়ের একটি এয়ারোস্পেস কোম্পানিতে এয়ারক্রাফট অ্যারোডাইনামিক ডিজাইন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত আছেন।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে অনুভূতি প্রকাশ করে তারিকুল বলেন, “এই অর্জন আমি উৎসর্গ করছি আমার শিক্ষক প্রফেসর সু ইউয়ান মিং, আমার বাবা-মা, স্ত্রী, বন্ধু ও দেশের সব শুভানুধ্যায়ীকে।”
জানা গেছে, তারিকুল ইসলাম ১৯৯৮ সালের ১২ এপ্রিল নওগাঁর রাণীনগর উপজেলা সদরের বেলোবাড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মো. বুলেট হোসেন রাণীনগর আল-আমিন দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক এবং মা মোছা. সুলতানা মোফতারুন বেগমও পেশায় একজন শিক্ষিকা। শিক্ষক দম্পতির বড় ছেলে তারিকুল ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ছিলেন। বেলোবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বৃত্তি পেয়ে রাণীনগর সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং ২০১৫ সালে এসএসসি ও ২০১৭ সালে সাভার ল্যাবরেটরি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ অর্জন করেন। তিনি শিক্ষাজীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে অসাধারণ ফলাফলের জন্য একাধিক সম্মাননা অর্জন করেন।
তার এই সাফল্যে পরিবার, এলাকাবাসী ও শুভানুধ্যায়ীরা গর্বিত। সকলে তারিকুল ইসলামের আগামীর পথচলা সুন্দর, সফল ও সার্থক হোক—এই কামনায় দোয়া ও শুভকামনা জানিয়েছেন।
কালের সমাজ//এসং//র.ন
আপনার মতামত লিখুন :