বাংলাদেশে আগামী বছরের শুরুতেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে এক ফোনালাপে তিনি এ কথা বলেন বলে জানানো হয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পক্ষ থেকে।
প্রেস উইং জানায়, সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে দুই নেতার মধ্যে প্রায় ১৫ মিনিট ফোনালাপ হয়। তাদের কথোপকথনকে ‘গঠনমূলক, বন্ধুত্বপূর্ণ ও আন্তরিক’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে, যা দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের প্রতিফলন।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, এ আলোচনায় অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার ও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিয়ে উভয় পক্ষ তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।
ফোনালাপে দ্বিপাক্ষিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট নানা বিষয় উঠে আসে, যার মধ্যে ছিল—বাংলাদেশে চলমান সংস্কার প্রক্রিয়া, গণতান্ত্রিক উত্তরণ, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ও রোহিঙ্গা ইস্যু। রুবিও বাংলাদেশের নির্বাচন আয়োজনের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন এবং প্রক্রিয়াটির প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান সম্প্রতি ওয়াশিংটনে মার্কিন উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টোফার ল্যান্ডাউয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন, যেখানে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারের অঙ্গীকার পুনর্নিশ্চিত করা হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশের জন্য শুল্ক স্থগিত রাখার যে অনুরোধে সাড়া দিয়েছেন, সে জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ড. ইউনূস।
তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি সম্ভাব্য অর্থনৈতিক সহযোগিতা প্যাকেজ নিয়ে আলোচনা চলছে, যা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ঘোষিত বাণিজ্য পরিকল্পনার আলোকে প্রণয়ন করা হবে।
দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামো পুনর্গঠনের প্রসঙ্গে ড. ইউনূস জানান, চলমান সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক সংস্কারের বিষয়গুলো উঠে আসছে। নির্বাচন কমিশন ভোট প্রক্রিয়াকে পুনর্গঠনে নিরলস কাজ করছে। তিনি উল্লেখ করেন, আগত নির্বাচনে দেশের তরুণ প্রজন্ম প্রথমবারের মতো ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবে।
রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও আলোচনায় গুরুত্বারোপ করা হয়। ড. ইউনূস বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ২০১৭ সাল থেকে রোহিঙ্গাদের সর্বোচ্চ মানবিক সহায়তা দিয়ে আসছে এবং সংকটটির টেকসই সমাধান ও প্রত্যাবাসনের সম্ভাবনা এখন অনেকটাই এগিয়েছে।
আলোচনার শেষদিকে তিনি মার্কো রুবিওকে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান, যাতে তিনি সরেজমিনে পরিবর্তন প্রত্যক্ষ করতে পারেন। ড. ইউনূস আশা প্রকাশ করেন, এ সফর দেশের তরুণদের অনুপ্রাণিত করবে।
কালের সমাজ//এসং//র.ন
আপনার মতামত লিখুন :