সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার হোসেনপুর ও লালসাবাড়ি গ্রামের মধ্যে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (২১ অক্টোবর) রাত আনুমানিক ৯টার দিকে এ সংঘর্ষ শুরু হয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা স্থায়ী হয়। এতে পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে চরম আতঙ্ক ও উত্তেজনা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় একটি প্রীতি ফুটবল ম্যাচ চলাকালে দুই গ্রামের সমর্থকদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এরই জেরে বুধবার রাতে পুনরায় উভয় পক্ষের শত শত মানুষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সংঘর্ষটি ভয়াবহ রূপ নেয়। ইটপাটকেল নিক্ষেপ, লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্রের ব্যবহার দেখা যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুই গ্রামের প্রায় দুই হাজার মানুষ এ সংঘর্ষে অংশ নেয়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত এক ডজন মানুষ আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
খবর পেয়ে পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনীর যৌথ বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে রাত ১১টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ সময় সংঘর্ষের মূল প্ররোচনাকারী সাতজনকে আটক করা হয়। পরে তাদের সিরাজগঞ্জ সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
সেনাবাহিনীর ১১ পদাতিক ডিভিশনের এক কর্মকর্তা জানান, “সংঘর্ষে জড়িতদের শনাক্তের কাজ চলছে। পরিস্থিতি এখন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
এদিকে ঘটনার পর থেকে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। টহল জোরদার রাখায় গ্রামে এখন তুলনামূলক শান্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আজমল হোসেন বলেন, “ছোট্ট একটা ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের মানুষ এভাবে লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়বে, ভাবতেও পারিনি। সবাই এখন ভয়ে আছে।”
সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, “পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। সংঘর্ষে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
হোসেনপুর ও লালসাবাড়ি গ্রাম দুটি দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশী হলেও স্থানীয় প্রতিযোগিতা ও সামাজিক আধিপত্যকে কেন্দ্র করে মাঝে-মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। বুধবারের সংঘর্ষের সূত্রপাত সেই পুরনো বিরোধের ধারাবাহিকতায়, যা এবার ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে বড় সহিংসতায় রূপ নেয়।
পুলিশ ও প্রশাসনের দাবি, এখন এলাকা শান্ত। তবে গ্রামবাসীর প্রত্যাশা—এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রশাসন কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।
কালের সমাজ/ সা এ
আপনার মতামত লিখুন :