ঢাকা সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
সালাহ উদ্দিন আহমেদ

জান্নাতের টিকিটধারীদের বাসস্টেশন কোথায়, জানতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক | ডিসেম্বর ৮, ২০২৫, ০১:০১ পিএম জান্নাতের টিকিটধারীদের বাসস্টেশন কোথায়, জানতে হবে

ধর্ম ব্যবসায়ীরা তরতরাইয়া জান্নাতের কথা বললেও মানুষ দুনিয়ায় কীভাবে চলবে, তাদের সে পরিকল্পনা নেই মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, তারা শুধু টেবলেট বিক্রি করছে। তবে তাদের বাসস্টেশন কোথায় তা জিজ্ঞেস করতে হবে।

তিনি বলেন, যে ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বিগত দিনে অনেক রক্ত ঝরেছে, তা ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করছে তারা। আমরা তা হতে দিবো না।

সোমবার (৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর খামারবাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভার দ্বিতীয় দিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ৭ দিনব্যাপী কর্মসূচিতে ঢাকার বিভিন্ন ইউনিটের ছাত্রদল নেতারা অংশগ্রহণ করেন।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলের সঞ্চালনায় সভাপতির বক্তব্য রাখেন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বিকালে লন্ডন থেকে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

সালাহ উদ্দিন আহমেদ ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আমরা জনগণের ভোট চাই। কিন্তু তাদের কী দিতে চাই সে পদক্ষেপ নিয়েছি। কারণ আমরা তো আর ধর্মের টেবল্যাট বিক্রি করতে পারি না।

তিনি আরো বলেন, তরুণরাই আগামীতে রাষ্ট্র পরিচালনা করবে। তাই প্রশিক্ষণ পাওয়া জ্ঞানগুলো জনগণের কাছে তুলে ধরতে হবে। পরিকল্পনা গুলো সঠিকভাবে তৃণমূলে ছড়িয়ে দিতে হবে।

বিএনপির অতীত ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরে তিনি বলেন, নিরক্ষরতা দূর করতে গণশিক্ষা কার্যক্রম চালু করেন জিয়াউর রহমান। তবে পরবর্তীতে এরশাদ তা বিলুপ্ত করেন। যতদিন পর্যন্ত আমরা পুরোপুরি অক্ষরজ্ঞান না হতে পারবো, ততদিন চেষ্টা করতে হবে।

তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া খাদ্যের বিনিময়ে শিক্ষার কর্মসূচি চালু করেন। এতে মা-বাবাদের মধ্যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন হয়। তারা সন্তানদের স্কুলে দিতে ব্যাপক আগ্রহী হয়ে ওঠেন। তিনি মেয়েদের বিরুদ্ধে অবৈতনিক শিক্ষা চালু করেন। এগুলো যুগান্তকারী পদক্ষেপ। ক্ষমতায় গেলে আমরা আরও নতুন নতুন প্রকল্প গ্রহণ করবো।

তিনি বলেন, গণতন্ত্র মানে বিএনপি। কারণ ১৯৭৫ সালে মৃতপ্রায় গণতন্ত্রকে উদ্ধার করেছেন জিয়াউর রহমান। পরবর্তীতে তিনি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। আর বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের জন্য আজীবন লড়াই করেছেন। ১৯৯৬ সালে জনগণের দাবিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু শেখ হাসিনা বাকশালের মতো ফ্যাসিবাদী কায়দায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করেছেন। পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্টতম শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন হাসিনা। বিষয়গুলো নিয়ে জনগণকে বুঝাতে হবে।

সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, জ্ঞানভিত্তিক রাজনীতির চর্চা করতে হবে। শুধু পল্টন থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত মানি না ও মানবো না মিছিল করলেই হবে না। জ্ঞান ও দক্ষতায় অন্য দলের কেউ যেন ধারেকাছেও ঘেঁষতে না পারে, সেভাবে নিজেদের তৈরি করতে হবে।

তিনি অভিযোগ করেন, বিদেশ থেকে কেউ কেউ এমনভাবে লিখছেন মনে হয়, তারা জ্ঞানের জাহাজ। তারা দেশের স্বার্থের কোনও বালাই করছেন না। আমরা মনে করি সবার আগে দেশ। সামাজিক মাধ্যমে অপপ্রচারের বিষয়ে নিজেদের যুক্তিযুক্ত কাউন্টার দিতে হবে।

তিনি বিএনপির ফ্যামিলি, কৃষি ও স্বাস্থ্য কার্ডসহ জনগণের কল্যাণে বিএনপির পরিকল্পনাগুলোর কথা সহজভাবে তুলে ধরতে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের তৃণমূলে ছুটে যাওয়ার আহ্বান জানান।

এতে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরী, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন ও বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।

এর আগে রোববার সপ্তাহব্যাপী এ কর্মসূচির প্রথম দিনের কর্মসূচি সকালে উদ্বোধন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দিনব্যাপী মতবিনিময়ের সমাপনীতে বিকালে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত দলের অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনের তৃণমূলের নেতারাও এতে অংশগ্রহণ করবেন বলে জানা গেছে।

কালের সমাজ/এসআর

Side banner
Link copied!