সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ, তাড়াশ ও উল্লাপাড়া উপজেলার কৃষকদের মধ্যে পাকা ধান ঘরে তোলা নিয়ে তীব্র উদ্বেগ ও শঙ্কা বিরাজ করছে। মাঠে ধানের মনোমুগ্ধকর সুবাস ছড়ালেও কৃষকের মনে স্বস্তি নেই। বিশেষ করে বৈশাখের প্রচণ্ড গরমের মধ্যে সন্ধ্যা নামতেই আকাশ কালো হলে আতঙ্কে ভোগেন তারা—আসবে কি ঝড়-বৃষ্টি?
গত বছর কালবৈশাখী ঝড় ও অকাল বন্যায় তিনটি উপজেলার নিচু জমির বোরো ধান পানিতে তলিয়ে যায়। ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ে কৃষকেরা এবার উন্নত জাতের ধান রোপণ করে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলেও আবারো একই শঙ্কায় দিন পার করছেন তারা।
তাড়াশ উপজেলার দিঘি সগুনার কৃষক আব্দুল ছালাম বলেন, “এবারও সন্ধ্যায় আকাশ কালো হলেই মনে হয়, ধান ঘরে তুলতে পারব না।”
সলঙ্গা আমশড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল খালেক জানান, গত বছর পানিতে ধান তলিয়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। একই কথা জানান উল্লাপাড়ার কৃষক আব্দুল আজিজ, যিনি বলেন, খাল খনন না করায় বৃষ্টির পানি জমে তাদের জমিতে আমন ধান আবাদ করতে পারেননি। এবার বোরো চাষ করে আগের ক্ষতি কিছুটা পুষানোর চেষ্টা করলেও বর্তমানে রোগ-বালাইয়ের আক্রমণে নতুন করে দুশ্চিন্তায় আছেন।
চলতি মৌসুমে ব্রি-২৮, সবুল লতা, কাটারীসহ আগাম জাতের ধান ইতোমধ্যে কাটা শেষ হলেও অনেক কৃষক চিটা, ব্লাস্ট, নেট রোগ ও কারেন্ট পোকার আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
রায়গঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুর রউফ জানান, এ বছর উপজেলায় ১৯ হাজার ৩০৫ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। গত বছরের অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে কৃষি বিভাগ সতর্ক রয়েছে। তবে কিছু এলাকায় রাতের ঠান্ডা তাপমাত্রার কারণে কোল্ড ইনজুরি ও নেক ব্লাস্ট দেখা দিতে পারে, ফলে ১৫-২০ শতাংশ ধানে চিটা হতে পারে।
সলঙ্গা থানার বীজ ও বালাইনাশক ডিলার সমিতির সহ-সভাপতি এবং জামায়াত নেতা আইয়ুব আলী জানান, “ব্লাস্ট ও কোল্ড ইনজুরির কারণে ফলন কিছুটা কমে যেতে পারে, তবে সার্বিকভাবে এবার বোরো আবাদের অবস্থা ভালো।”
তবুও কৃষকদের দাবি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে ফসল রক্ষায় সরকারি সহযোগিতা এবং আগাম প্রস্তুতি আরও জোরদার করা জরুরি।
কালের সমাজ//এসং//র.ন
আপনার মতামত লিখুন :