চলমান জুলাই মাসের প্রথম ১২ দিনেই প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশে পাঠিয়েছেন ১.০৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা দেশীয় মুদ্রায় প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২১ টাকা হিসাবে)। সংশ্লিষ্টদের ধারণা, এই ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি মাস শেষে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ২.৭৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
রোববার (১৩ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে পাঠানো এ রেমিট্যান্স দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। হুন্ডি প্রতিরোধ, প্রণোদনা সুবিধা ও ব্যাংক ব্যবস্থাপনার উন্নতির কারণে রেমিট্যান্স প্রবাহে এ গতি এসেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
চলতি অর্থবছরের আগের মাস জুনে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ২.৮২ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের জুন মাসের তুলনায় ১১ শতাংশ বেশি।
২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সদ্যসমাপ্ত অর্থবছরে দেশে এসেছে মোট ৩০.৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। আগের অর্থবছর ২০২৩-২৪-এ এই অঙ্ক ছিল ২৩.৭৪ বিলিয়ন ডলার। ফলে মাত্র এক অর্থবছরে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে প্রায় ২৭ শতাংশ। এই প্রবৃদ্ধি দেশের অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা এবং ডলারের সরবরাহে স্বস্তি ফিরিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩১.৬৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা গত দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। ২০২৩ সালের জুন শেষে রিজার্ভ ছিল ৩১ বিলিয়ন ডলার এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষে রিজার্ভ ছিল ২৬.৭১ বিলিয়ন ডলার।
আইএমএফ-এর বিপিএম-৬ হিসাব অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৬.৬৬ বিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছর শেষে ছিল ২১.৬৮ বিলিয়ন ডলার।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রাক্কলন অনুযায়ী, আগামী অর্থবছর (২০২৫-২৬) দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৪ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হতে পারে। ‘মিডিয়াম টার্ম ম্যাক্রোইকোনমিক পলিসি স্টেটমেন্ট’ অনুযায়ী, এসময়ে রপ্তানি আয়ে ১০ শতাংশ, আমদানি খরচে ৮ শতাংশ এবং রেমিট্যান্স প্রবাহে ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
কালের সমাজ//র.ন
আপনার মতামত লিখুন :