পাবনার চাটমোহরে ব্যতিক্রমী এক নির্বাচনকে ঘিরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ও উৎসাহের সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা সদরের মূলগ্রাম ইউনিয়নের বালুদিয়ার, মহরমখালী ও জগতলা (আংশিক) গ্রামের সম্মিলিত কবরস্থান ‘জান্নাতুল বাকি’ পরিচালনা কমিটির সভাপতি পদে ভোটের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা স্থানীয়ভাবে এক অভিনব ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ায় নতুন সভাপতি নির্বাচনে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে বিষয়টি থানা পর্যন্ত গড়ায়। পরে এলাকাবাসীর দাবিতে থানার পরামর্শে গঠিত হয় ৭ সদস্যের নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করা হয় এবং তিন গ্রামের প্রতিটি পরিবার থেকে একজন করে মোট ৮০০ জন পুরুষ ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হন।
আগামী ২৪ মে (শনিবার) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ঈদগাহ মাঠে অনুষ্ঠিতব্য ভোটে কবরস্থান কমিটির আগামী তিন বছরের জন্য সভাপতি নির্বাচিত হবেন।
নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দুই প্রার্থী—আবদুল কুদ্দুস (প্রতীক: ছাতা) ও শরিফুল ইসলাম (প্রতীক: চেয়ার)। উভয় প্রার্থী ৩০ হাজার টাকা করে মনোনয়ন ফি জমা দিয়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এই অর্থ দিয়েই পরিচালনা করা হবে নির্বাচনের যাবতীয় খরচ।
নির্বাচন কমিশন প্রধান ও কবরস্থান কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন মাস্টার বলেন, “উভয় পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ হিসেবে নির্বাচনই একমাত্র উপায় মনে করেছি।”
এদিকে সাধারণ মানুষের মধ্যে নির্বাচন ঘিরে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। স্থানীয় নির্বাচন বা জাতীয় নির্বাচনের মতোই চলছে প্রার্থীদের প্রচারণা, গণসংযোগ ও উন্নয়ন প্রতিশ্রুতি।
চাটমোহর থানার ওসি মঞ্জুরুল আলম জানান, “এ বিষয়ে আমরা অবগত। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
প্রার্থীরা জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ভোটারদের রায়কে সম্মান জানিয়ে তারা কবরস্থান উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে চান। পাশাপাশি নির্বাচনের দিন প্রশাসনের কঠোর নজরদারিও কামনা করেছেন তারা।
স্থানীয়দের মতে, এটি শুধু একটি নির্বাচন নয়—এটি এলাকার সচেতনতা, সংগঠিত সমাজব্যবস্থা এবং গণতান্ত্রিক চর্চার একটি নজির।
কালের সমাজ//এসং//র.ন
আপনার মতামত লিখুন :