শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলার টেংগরপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ে এইচএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র চালুর ফলে বিদ্যালয়ের প্রায় হাজারো শিক্ষার্থীর নিয়মিত শ্রেণি কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। মাত্র ২৪ জন কলেজ পরীক্ষার্থীর জন্য বছরের প্রায় তিন মাস ক্লাস বন্ধ থাকায় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, টেংগরপাড়া উচ্চবিদ্যালয় একটি মাধ্যমিক পর্যায়ের প্রতিষ্ঠান। বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র থাকায় প্রতি বছরই কিছুদিন ক্লাস বন্ধ থাকে। তার সঙ্গে এইচএসসি পরীক্ষাও যুক্ত হওয়ায় প্রায় তিন মাস শ্রেণি কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ রাখতে হয়। চলতি বছরের অর্ধবার্ষিক পরীক্ষাও অনিশ্চয়তায় পড়েছে।
অতীতে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এটি এইচএসসি কেন্দ্র হিসেবে অনুমোদন পায়। বর্তমানে হালিমা আহসান কলেজ, ভারেরা এসপি কলেজ, বালুরচর স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং বিষ্ণপুর কলেজের পরীক্ষার্থীরা এখানে পরীক্ষা দেয়। তবে চলতি বছর বালুরচর ও বিষ্ণপুর কলেজ থেকে একজনও রেজিস্ট্রেশন করেনি, অথচ তাদের দেখিয়ে কেন্দ্র চালু রাখা হয়েছে।
টেংগরপাড়া স্কুলের শিক্ষার্থীরা বলেন, বছরে সাপ্তাহিক বন্ধ প্রায় দুই মাস, রমজান মাসে ১ মাস বন্ধ, এসএসসি কেন্দের জন্য দেড় মাস বন্ধ,অনান্য ছুটি প্রায় দেড় মাস, এখন যদি এইএসসি কেন্দ্রের জন্য দেড় মাস ক্লাস বন্ধ থাকে, তাহলে আমাদের শ্রেনী কার্যক্রম অনেক পিছিয়ে যাবে। এই স্কুলের অধিকাংশ ছাত্র দরিদ্র তারা সবাই স্কুলের ক্লাস এর উপর নির্ভরশীল, প্রায় ৬ মাস যদি ক্লাস না হয়, আমরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হবো।
বিদ্যালয়ের সভাপতি শাকিল আহম্মেদ বলেন, “মাত্র কয়েকজন কলেজ শিক্ষার্থীর জন্য আমাদের ৭০০ শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এটা কোনোভাবেই যুক্তিসঙ্গত নয়। বিষয়টি আমরা শিক্ষা বোর্ডে জানাব।
প্রধান শিক্ষক ফারুখ আহমেদ জানান, “পরীক্ষাকেন্দ্র পরিচালনায় সব শ্রেণিকক্ষ ব্যবহার করতে হয়, তাই ক্লাস নেওয়া সম্ভব হয় না। এতে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা মূল পাঠ থেকে অনেক পিছিয়ে পড়ছে।”
একজন অভিভাবক বলেন, “২০-২৫ জনের জন্য হাজারো শিক্ষার্থীর শিক্ষা বন্ধ রাখা চরম অন্যায়। দ্রুত কেন্দ্র বাতিল করে ক্লাস চালু রাখা জরুরি।”
হালিমা আহসান কলেজের অধ্যক্ষ দাবি করেন, টেংগরপাড়া স্কুলে কোন এইচএসসি কেন্দ্র আছে তিনি তা জানেন না। তিনি আরো বলেন শিক্ষা অধিদপ্তর কেন্দ্র নির্ধারণ করলে তাতে সমস্যা কোথায়।
শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শেখ জাবের আহম্মেদ বলেন, “আমি বিষয়টি অবগত আছি। শিক্ষার্থীদের স্বার্থে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
কালের সমাজ/ সাএ
আপনার মতামত লিখুন :