সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলায় এক চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের ঘটনা উদঘাটন করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। সাত বছরের শিশু ছোঁয়া মনিকে হত্যার অভিযোগে তার ফুপাতো ভাই মো. মনিরুল ইসলাম জিহাদকে (২১) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার (২৩ আগস্ট) বিকেলে রায়গঞ্জ আমলী আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ওমর ফারুকের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন গ্রেপ্তারকৃত মনিরুল।
গ্রেপ্তারকৃত জিহাদ উল্লাপাড়া উপজেলার হাওড় গ্রামের মো. জিল্লুর রহমানের ছেলে এবং নিহত ছোঁয়া মনি রায়গঞ্জ উপজেলার পাঙ্গাসী ইউনিয়নের মীরের দেউলমুড়া গ্রামের সুমন শেখের মেয়ে। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে নিহত শিশুটির মা আতিয়া পারভীনকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হক রতন জানান, শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে মনিরুল ইসলাম জিহাদকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে জিহাদ স্বীকার করেছে যে, বুধবার (২০ আগস্ট) সকাল ৯টার দিকে তার মামাতো বোন ছোঁয়া মনিকে মাদ্রাসা থেকে ফেরার পথে ধর্ষণের চেষ্টা করে। ছোঁয়া মনি এ ঘটনা তার বাবা-মাকে বলে দিতে চাওয়ায় জিহাদ তাকে প্রতিবেশীর পরিত্যক্ত টয়লেটের দেয়ালের সাথে আছড়ে হত্যা করে এবং টয়লেটের মধ্যে রেখে চলে যায়।
এসআই নাজমুল আরও জানান, হত্যাকাণ্ডের পর জিহাদ বাড়ি গিয়ে অন্যান্যদের সাথে নিজেও ছোঁয়া মনিকে খোঁজার নাটক করে এবং মসজিদে মাইকিংও করে। টয়লেট থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার হওয়ার খবর পেয়ে সে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে জিহাদের রক্তমাখা গেঞ্জি ও লুঙ্গি উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার (২০ আগস্ট) বিকেলে প্রতিবেশীর ভাঙা ও পরিত্যক্ত টয়লেট থেকে ছোঁয়া মনির রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় শিশুটির দাদী মোছা. ফিরোজা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে রায়গঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। ঘটনার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গোয়েন্দা পুলিশ রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়। এই মর্মান্তিক ঘটনা সিরাজগঞ্জের স্থানীয় জনগণের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক এবং ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিষয়টি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করছে এবং দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।
কালের সমাজ/ জ.র./সাএ
আপনার মতামত লিখুন :