ঢাকা সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

বেনিনে সেনাদের অভ্যুত্থানের ব্যর্থ চেষ্টা

কালের সমাজ ডেস্ক | ডিসেম্বর ৭, ২০২৫, ১০:১০ পিএম বেনিনে সেনাদের অভ্যুত্থানের ব্যর্থ চেষ্টা

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ বেনিনে একদল বিদ্রোহী সেনা রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে হঠাৎ হাজির হয়ে ক্ষমতা দখলের ঘোষণা দেয়ার পর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দেশটির সরকার জানিয়েছে, অভ্যুত্থানচেষ্টা পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে।

রোববার (৭ ডিসেম্বর) এক সরকারি বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ। খবর রয়টার্স ও এএফপির।

রোববার ভোরে অন্তত আটজন সৈন্য টেলিভিশনে উপস্থিত হয়ে জানান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল পাসকাল তিগ্রির নেতৃত্বে একটি সামরিক কমিটি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছে। তারা জাতীয় সংসদসহ সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান বাতিল, সংবিধান স্থগিত এবং দেশের আকাশ, স্থল ও সমুদ্রবন্দর বন্ধ ঘোষণা করে।

সেনাদের একজন টেলিভিশনে পাঠ করা বিবৃতিতে দাবি করেন, তারা বেনিনের জনগণকে ‘ভ্রাতৃত্ব, ন্যায়বিচার ও কর্মপ্রাধান্য’ভিত্তিক নতুন একটি যুগ উপহার দিতে চায়।

কয়েক ঘণ্টা পরই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলাসানে সাইদু সরকারি বিবৃতিতে জানান, সেনা সদরদপ্তর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে এবং অভ্যুত্থানচেষ্টা নস্যাৎ করা হয়েছে। জনগণকে স্বাভাবিক কাজে ফেরার অনুরোধ জানায় সরকার।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওলুশেগুন আজাদি বাকারি রয়টার্সকে বলেন, এটি ছিল ‘ছোট একটি দলের’ প্রচেষ্টা। তারা শুধু রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের নিয়ন্ত্রণ নিতে পেরেছিল। প্রেসিডেন্ট পাত্রিস তালোঁর প্রতি বিশ্বস্ত বাহিনী দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেছে।

ঘটনার সময় রাজধানী ও অর্থনৈতিক কেন্দ্র কটোনুর কয়েকটি এলাকায় গুলির শব্দ শোনা যায়। প্রেসিডেন্ট পাত্রিস তালোঁর বাসভবনের কাছেও গোলাগুলির সংবাদ পাওয়ার পর কটোনুর ফরাসি দূতাবাস নাগরিকদের ঘরে থাকার আহ্বান জানায়।

আগামী এপ্রিলে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনের প্রস্তুতির মধ্যেই এই অভ্যুত্থানচেষ্টা ঘটে। ২০১৬ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট পাত্রিস তালোঁর মেয়াদ ওই সময় শেষ হওয়ার কথা। তার উত্তরসূরি হিসেবে ক্ষমতাসীন জোট মনোনয়ন দিয়েছে অর্থমন্ত্রী রোমুয়াল্ড ওয়াদাগনিকে। তিনি সরকারের বড় ধরনের অর্থনৈতিক সংস্কারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।

বিরোধীরা বলছে, সম্প্রতি প্রেসিডেন্টের মেয়াদ পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে সাত বছর করার যে সাংবিধানিক সংশোধনী আনা হয়েছে, তা ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতা ধরে রাখার কৌশল।

উত্তরাঞ্চলের অবনতিশীল নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে অভ্যুত্থানকারীরা তাদের ঘোষণায় তুলে ধরে। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় প্রতিবেশী মালি ও বুরকিনা ফাসোর মতো বেনিনেও জঙ্গি হামলা তীব্র আকার ধারণ করেছে। গত এপ্রিলে আল কায়েদাসংযুক্ত একটি গোষ্ঠীর হামলায় দেশটির উত্তরাঞ্চলে ৫৪ সেনা নিহত হয়, যা সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে ভয়াবহ ক্ষতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

কালের সমাজ/এসআর

Side banner
Link copied!