রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার একটি বাসা থেকে মা-মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরিবারের ধারণা, গৃহকর্মী আয়েশা এই হত্যায় জড়িত।
এদিকে সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনা করে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। খোঁজা হচ্ছে আয়েশাকে। হত্যায় ব্যবহৃত দুটি ছুড়ি উদ্ধার করেছে পুলিশ। ফুটেজে দেখা গেছে, মা-মেয়েকে হত্যার পর গোসল করে মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলের পোশাক পরে বেরিয়ে যায় গৃহকর্মী আয়েশা।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, সোমবার সকাল সাতটা ৫২ মিনিটে মোহাম্মপুরের শাজাহান রোডের এই বাসায় প্রবেশ করেন গৃহকর্মী আয়েশা, এ সময় তার শরীরে ছিল কালো বোরকা। তিনি বাসাটির আট তলায় উত্তরার সানবিমস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যাপক এ জেড আজিজুল ইসলামের বাসায় কাজ করতে যান। এরপর ঠিক, ৯টা ৩৬ মিনিটে বাসাটি থেকে বের হতে দেখা যায় আয়েশাকে। সে সময় তার গায়ে দেখা যায় স্কুলড্রেস এবং কাঁধে একটি ব্যাগ। পুলিশের ধারণা, মা-মেয়েকে হত্যার পর পোশাক বদলে বেরিয়ে যায় গৃহকর্মী আয়েশা।
গৃহকর্মী আয়েশা যখন বাসায় কাজ করে যায়, তখন বাসায় ছিলেন আজিজুল ইসলামের স্ত্রী লায়লা আফরোজ ও মেয়ে মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিজা। ১১টার পরে বাসায় এসে স্বামী আজিজুল দেখতে পান, তার স্ত্রী ও মেয়ের রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে আছে।
খবর পেয়ে ছুটে আসেন স্বজন ও প্রতিবেশীরা। তারা জানান, নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী নাফিজা পড়তো মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলে। সোমবার ছিলো বার্ষিক পরীক্ষার শেষ দিন। পুলিশ আসার আগেই নাফিজাকে নেয়া হয় হাসপাতালে। সেখানেই মৃত ঘোষণা করে চিকিৎসক।
নিহত নাফিজার বাবা আজিজুল ইসলাম বলেন, বাসায় একজন গৃহকর্মী দরকার ছিলো। সাধারণত গেটে অনেকে কাজের সন্ধানে আসেন। চারদিন আগে একটি মেয়ে আসে। বোরকা পরিহিত মেয়েটি বাসার দারোয়ান খালেকের কাছে কাজের সন্ধান করলে সে আমাদের বাসায় পাঠিয়ে দেয়। এরপর আমার স্ত্রী মেয়েটির সঙ্গে কথা বলে কাজে রেখে দেয়।
পরে স্ত্রীর মুখে শুনেছি, মেয়েটার নাম আয়েশা। বয়স ২০ বছর। তার গ্রামের বাড়ি রংপুর। জেনেভা ক্যাম্পে চাচা-চাচির সঙ্গে থাকে। বাবা-মা আগুনে পুড়ে মারা গেছে। তার শরীরেও আগুনে পোড়ার ক্ষত রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মেয়েটা কাজ শুরুর পর প্রথম দুদিন সময়মতো এসেছে। গতকাল সে সাড়ে ৯টার দিকে আসে। আজ কী হয়েছে, এটা তো আর বলার অবস্থায় নেই।
পুলিশ জানায়, সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনা করে জড়িতদের নেয়া হবে আইনের আওতায়। উদ্ধার করা হয়েছে, হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি। মাত্র চার দিন আগে বাসার দারোয়ান মালেকের মাধ্যমে ওই মেয়েকে আনা হয়। পরে গৃহকর্মী হিসেবে নিহত আফরোজের বাসায় কাজ দেয়া হয়। তখন নিজের নাম আয়েশা বলে পরিচয় দেয়। পরে মা-মেয়েকে হত্যার পর নিহত নাফিজার স্কুল ড্রেস পরে বের হয়ে যায় সেই মেয়ে।
কালের সমাজ/এসআর


আপনার মতামত লিখুন :