বাগেরহাটের ঐতিহ্যবাহী যাত্রাপুর বাজারে ভাড়া আদায়ে বাধা প্রদানের অভিযোগ পাওয়া গেছে। হাটের আংশিক দাবিদার বেগ মাহফুজুর রহমান বাদল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং জেলা প্রশাসক বরাবর এ বিষয়ে অভিযোগ দাখিল করেছেন। তার জমির উপর থেকে প্রশাসন যাতে খাজনা আদায় না করে এবং তাকে ভাড়া আদায়ে বাধা-প্রদান না করে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতেও অনুরোধ করেছেন অভিযোগে। অভিযোগকারী বেগ মাহফুজুর রহমান বাদল রহিমাবাদ এলাকার মৃত ইউসুফ আলী বেগের ছেলে। তিনি যেন বাজার থেকে শান্তিপূর্ণভাবে ভাড়া আদায় করতে পারে এ ব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
অভিযোগকারী জানান, বেগ ইউসুফ আলী যাত্রাপুর হাটের .৮২ একর জমি আদালত থেকে ডিগ্রি প্রাপ্ত হন। সরকারপক্ষ আপিল দাখিল করলে ১১ সালের ২৪ জুলাই মামলাটি খারিজ হয়। সরকার পক্ষ আবারও ওই জমিতে ইমারত নির্মাণ এবং ইজারা দেওয়ার চেষ্টা করিলে অভিযোগকারী হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেন। গত ১৮ মার্চ আদালতের আদেশে স্থিতি অবস্থা বজায় রাখা নির্দেশ প্রদান করেন।
অভিযোগকারী আরো জানান, আদালতের নির্দেশ অমান্য করে এবং প্রাপ্ত .৮২ একর জমি পৃথক না করে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যাত্রাপুর হাট থেকে খাজনা আদায় করিবার চেষ্টা করিতেছে। তাছাড়া অভিযোগকারীদের বাজার থেকে ভাড়া আদায় করিতে বাধা প্রদান করিতেছে। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার স্থানীয় প্রশাসনের সাথে আলাপ-আলোচনা করিলে ও কোন সমাধান হইতেছে না।
এ বিষয়ে বাগেরহাট জেলা সরকারি আইন কর্মকর্তা (জি.পি) অ্যাডভোকেট মোল্লা মোজাফফর আলীর মতামতে উল্লেখ করেন, রাষ্ট্রপক্ষ এবং বেগ ইউসুফ আলীর মধ্যে চলা মামলাটি রাষ্ট্রপক্ষ চরম অবহেলা করিয়াছে। পুনরায় আপিল করারও সুযোগ নাই। স্থায়ী নিষেধাজ্ঞার রায় ডিগ্রী পূর্বেই অমান্য করা হয়েছে। বেগ ইউসুফ আলীর পক্ষ violation of courts order amounts to contemt of court এর অভিযোগে মোকাদ্দামা দায়ের কিংবা ক্ষতিপূরণ দাবী করিলে অবস্থাগত ভাবে প্রতিকার পাইবেন। তাছাড়া হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের অস্তিত্ব সম্মান রক্ষার স্বার্থে ওই মোকাদ্দামায় প্রতিকার দিতে অত্যন্ত সজাগ সচেতন রহিয়াছেন। সহকারি কমিশনার ভূমি বাগেরহাট সদরকে দেওয়া এক মতামতে নিজেরা ঝুঁকি না নিয়া বা ক্ষতিগ্রস্ত না হইয়া ওই সমস্ত মোকাদ্দমার দায় হইতে বাঁচিবার জন্য ডিগ্রিদার পক্ষ ক্ষতিপূরণ দাবী করিবেন না, ভায়োলেসন এর মোকাদ্দমা দায়ের করিবেন না মর্মে অঙ্গীকার নিয়ে বিরোধটি নিষ্পত্তি করিবার ব্যবস্থা নিতে তড়িৎ পদক্ষেপ নেবার পক্ষে মত প্রদান করেন।
এর আগে ১৬ সালের ১৮ এপ্রিল বাগেরহাট সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসমিন ফারহানা যাত্রাপুর হাটের ০.৮২ একর সম্পত্তি সংক্রান্ত নির্দেশনা চেয়ে বাগেরহাট জেলা প্রশাসক বরাবর চিঠি প্রদান করেন। চিঠিতে উল্লেখ করা হয় ইউসুফ আলী বেগ সরকারকে বিবাদী করে খুলনার সাব জজ আদালতে দেওয়ানী ৭৯/৬০ নং মামলা দায়ের করেন যা দেওয়ানি ৪৮/৬১ নং মামলায় পরিবর্তিত হয়ে অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতে সরকারের বিরুদ্ধে ডিক্রি হয়। ডিক্রির বিরুদ্ধে সরকার আপিল করেন। সরকারপক্ষ উক্ত মামলার স্বপক্ষে কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হলে ১১ সালের ১১ই মে মামলাটি খারিজ হয়। যার ফলে নিম্ন আদালতের রায় বিক্রি বল থাকে।
বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস, এম, মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, যাত্রাপুর বাজারে যে ৮২ শতক জমি নিয়ে বিবাদ রয়েছে ওই জমি ছাড়াই ইজারা প্রদান করা হয়েছে। ওই জমি থেকে উভয় পক্ষকে ৬ মাসের জন্য খাজনা আদায়ে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আদালত। বাজারের অন্যান্য যে জমি রয়েছে, সেখান থেকে ইজারাদার নিয়ম অনুযায়ী খাজনা নিতে পারবে। বিবাদমান বিষয়ে আদালত যে সিদ্ধান্ত দিবে আমরা তা বাস্তবায়ন করব।
কালের সমাজ//র.ন
আপনার মতামত লিখুন :