ঢাকা সোমবার, ০৪ আগস্ট, ২০২৫, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২

তিস্তার পানি কমলেও দুর্ভোগ কাটেনি নদীপাড়ের মানুষের

কালের সমাজ | নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি আগস্ট ৪, ২০২৫, ০১:২৩ পিএম তিস্তার পানি কমলেও দুর্ভোগ কাটেনি নদীপাড়ের মানুষের

তিস্তা নদীর পানি ধীরে ধীরে কমতে শুরু করলেও প্লাবিত এলাকার মানুষের দুর্ভোগ এখনো কাটেনি। সোমবার (৪ আগস্ট) সকাল ৯টায় নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও ভাটির বিস্তীর্ণ অঞ্চল এখনো পানির নিচে।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) সূত্রে জানা গেছে, রোববার (৩ আগস্ট) সকালে তিস্তার পানি ছিল বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার নিচে। সকাল ৯টায় তা বিপৎসীমায় পৌঁছায় এবং দুপুরে ৫ সেন্টিমিটার ওপরে উঠে। রাতের পর থেকে পানি কিছুটা কমেছে।

তবে হঠাৎ পানি বৃদ্ধিতে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ী, টেপাখড়িবাড়ী, খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী ও গয়াবাড়ী এবং জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ী, শৌলমারী ও কৈমারী ইউনিয়নের চরাঞ্চলে প্রায় ৮-১০ হাজার পরিবারের বাড়িঘরে পানি ঢোকার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহিন জানান, “এ অঞ্চলের ১০টি চরগ্রামের মানুষ তীব্র আতঙ্কে রয়েছেন। ইতোমধ্যেই খগাখাড়িবাড়ির বাইশপুকুর গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।”

পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান বলেন, “এই ইউনিয়নের সবচেয়ে বড় চর ঝাড়সিংশ্বরসহ বিভিন্ন এলাকায় পানি ঢুকে পড়েছে। এতে ফসলি জমি ও বীজতলা তলিয়ে গেছে।”

ডালিয়া ব্যারাজের ভাটিতে থাকা লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা ও কালিগঞ্জ উপজেলার চর ও গ্রামগুলোও পানিতে ডুবে গেছে। অনেক স্থানে বাড়িঘরে হাঁটুসমান পানি উঠেছে। নিরাপদে থাকতে মানুষজন পরিবার নিয়ে উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, আপাতত তিস্তার পানি কমলেও আগামী তিন দিনের মধ্যে তা আবারও বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। এতে লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার নিম্নাঞ্চলে নতুন করে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা রয়েছে।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী জানান, “উজানে টানা বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলের কারণে তিস্তা নদীতে পানি বেড়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যারাজের ৪৪টি স্লুইসগেট খুলে রাখা হয়েছে। আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় আছি।”

তিনি আরও জানান, পানি কিছুটা কমলেও ঝুঁকি একেবারে কেটে যায়নি। সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।

কালের সমাজ//র.ন

Side banner
Link copied!