শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলার বাকাকুড়া বাজারে উচ্ছেদ হওয়া ভূমিহীন পরিবারগুলো মানবেতর অবস্থায় জীবনযাপন করছে। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) দুপুরে বাকাকুড়া বাজারে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভূমিহীন পরিবারের প্রতিনিধি মোশারফ হোসেন ।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমরা বাকাকুড়া গ্রামের ভূমিহীন পরিবার। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে প্রায় ৫০ বছর ধরে এ জায়গায় বসবাস করে আসছি। কিন্তু হঠাৎ করেই উচ্ছেদের নোটিশ ও দমনমূলক পদক্ষেপ নিয়ে আমাদের ঘর-বাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ফলে নারী-শিশুসহ প্রায় ৩৫-৪০ জন সদস্য এখন খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। আমাদের প্রতিদিন অনাহারে দিন পার করতে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এই উচ্ছেদকে আমরা অমানবিক ও অযৌক্তিক হিসেবে মনে করছি। প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, আমাদের আগের জায়গায় থাকার অনুমতি প্রদান করতে হবে অথবা ভূমির লিজ বা মালিকানা দিয়ে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। একই সঙ্গে অবিলম্বে খাদ্য ও মানবিক সহায়তা প্রদানের অনুরোধ করছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত পরিবারগুলো দাবি করে, প্রশাসন যদি তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে তবে তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে রাস্তায় অনশনে বসতে বাধ্য হবেন।
এ সময় ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, উন্নয়নের নামে গরিবদের ঘরবাড়ি ভেঙে রাস্তায় বসানো মানবিক কোনো সিদ্ধান্ত নয়। সরকার চাইলে আগে বিকল্প আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে তারপর উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারত।
এই বিষয়ে ঝিনাইগাতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফুল আলম রাসেল জানান, উচ্ছেদ হওয়া পরিবারগুলো দীর্ঘদিন ধরে সরকারি খাস জমিতে বসবাস করছিল। নিয়ম অনুযায়ী তাদের উচ্ছেদের নোটিশ প্রদান করা হয়েছিল, তবে নির্ধারিত সময়ে স্থাপনা সরানো হয়নি। ফলে আইনগত প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই অবৈধ স্থাপনা অপসারণ করা হয়েছে।তিনি আরও বলেন, জনগণের সেবা কার্যক্রমকে আরও সহজ ও কার্যকর করতে সেখানে নতুন ভূমি অফিস নির্মাণ করা হবে। তবে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো যদি পুনর্বাসনের জন্য আবেদন করে, তাহলে সরকারিভাবে নিয়ম অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে।
কালের সমাজ//র.ন
আপনার মতামত লিখুন :