পার্বত্য জেলা বান্দরবানের সদর উপজেলার টংকাবতী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় ঝোপঝাড়ে পরিণত হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, কখন শেষবার এটি খোলা হয়েছিল তা কেউ বলতে পারছে না। কেন্দ্রটি ঘুরে দেখা যায়, চারপাশে বড় বড় আগাছা ও ঝোপ, যা মশাবাহিত রোগের জন্য পরিবেশ সৃষ্টি করছে। অফিসের প্রবেশ মুখ ব্যবহারযোগ্য নয়, বিভিন্ন স্থানে ময়লা পানি জমে আছে এবং ভেতরে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা শূন্য।
এদিকে কেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মাসের পর মাস অনুপস্থিত থেকে সরকারি বেতন, ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন। স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে কর্মকর্তা- কর্মচারিদের অনুপস্থিতির কারণে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী চিকিৎসা ও ওষুধ সেবার বাইরে রয়েছে। প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে আসা পাহাড়ী ও বাঙালি রোগীরা সেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ রফিক বলেন, “দূর-দূরান্ত থেকে শত শত মানুষ আসে সেবা নিতে। কিন্তু কেন্দ্রটি নিয়মিত খোলা না থাকায় অনেকেই ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।”
জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের তথ্য মতে, কেন্দ্রের দেখাশুনার দায়িত্বে থাকা বান্দরবান সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও মেডিকেল অফিসার ডাঃ রাশেদ নিজাম এখন পর্যন্ত কেন্দ্র পরিদর্শন করেননি। তবে তিনি বিভিন্নবার পরিদর্শন ভাতা গ্রহণ করেছেন। এই বিষয়ে ডাঃ রাশেদ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “৭ আগস্ট কেন্দ্রের দায়িত্ব সংহিতা দেবীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে, তিনি এক মাসের ছুটি নিয়েছেন। ছুটি শেষে যোগদান করবেন।”
বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের আহ্বায়ক রাজুময় তঞ্চ্যাঙ্গা জানান, ইতোমধ্যে তিনজন স্টাফকে বদলি করা হয়েছে। এছাড়া কেন্দ্র ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়িত্বে অবহেলা এবং সরকারি গাছ কাটা সংক্রান্ত অভিযোগ তদন্তের জন্য চেয়ারম্যান তাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। প্রমাণিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বান্দরবান জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডাঃ লেনিন তালুকদার বলেন, “দুইটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। যাদের কর্মস্থলে অনুপস্থিতি, দায়িত্ব অবহেলা বা সরকারি গাছ কাটা সংক্রান্ত অভিযোগ প্রমাণিত হবে, তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
কালের সমাজ // র.ন
আপনার মতামত লিখুন :