ঢাকা সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১৪ আশ্বিন ১৪৩২

লামায় মুসলিম শিক্ষকের অভাব, ইসলাম শিক্ষা বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা

জেলা প্রতিনিধি, বান্দরবান | সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৫, ০২:৫৯ পিএম লামায় মুসলিম শিক্ষকের অভাব, ইসলাম শিক্ষা বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা

বান্দরবানের লামা উপজেলার গজালিয়া হেডম্যান পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা পাঠদান বন্ধ রয়েছে। বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত, যার মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশই মুসলিম। কিন্তু ৬টি পদে কর্মরত সব শিক্ষকই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী হওয়ায় মুসলিম শিক্ষার্থীরা চরমভাবে পিছিয়ে পড়ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মুসলিম শিক্ষক না থাকায় অনেক সময় উপজাতি শিক্ষকদের ইসলাম শিক্ষা পড়াতে হচ্ছে। তবে আরবি হরফ, সূরা বা আয়াতের সঠিক উচ্চারণ ও ব্যাখ্যা তারা না জানায় শিক্ষার্থীরা সঠিকভাবে পড়াশোনা করতে পারছে না। এতে অনেকে বাধ্য হয়ে বিদ্যালয় ছেড়ে অন্যত্র ভর্তি হচ্ছে।

স্থানীয় অভিভাবক আবদুর রহমান বলেন, “সব শিক্ষক উপজাতি হওয়ায় আমি আমার সন্তানকে অন্য স্কুলে পড়াচ্ছি। এতে আমাদের অনেক কষ্ট হচ্ছে।” একই অভিযোগ জানিয়ে ওবাইদুল্লাহ বলেন, “ইসলাম শিক্ষা না থাকায় অনেক অভিভাবক সন্তানদের অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছেন। অন্তত একজন মুসলিম শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া জরুরি।”
পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী হাসান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “তিন মাস পর ফাইনাল পরীক্ষা, কিন্তু আরবি পড়াতে পারছে না কেউ। আমরা কীভাবে প্রশ্নের উত্তর লিখব?”

লামা ওলামা ঐক্য পরিষদের সভাপতি মাওলানা আনোয়ার হোসাইন বলেন, “মুসলিম শিক্ষার্থী থাকা সত্ত্বেও শুধু বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী শিক্ষক পোস্টিং রহস্যজনক। দ্রুত তদন্ত করে মুসলিম শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।”

অভিযোগ উঠেছে, বিদ্যালয়ের সব শিক্ষকই নিকটবর্তী এলাকা থেকে বদলি হয়ে এসেছেন। স্থানীয় অভিভাবকদের দাবি, উপরমহলকে ম্যানেজ করেই এ বদলিগুলো হয়েছে, অথচ মুসলিম শিক্ষার্থীদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হয়েছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মংক্যনু মার্মা বলেন, “আমরা উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে মুসলিম শিক্ষক চেয়ে আবেদন করেছি। গত এক মাসে ২০-২৫ জন শিক্ষার্থী বিদ্যালয় ছেড়েছে।”
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার দেবাশীষ বিশ্বাস বলেন, “বর্তমানে বদলি কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ রয়েছে। তবুও উপরমহলের সঙ্গে আলোচনা করে যত দ্রুত সম্ভব মুসলিম শিক্ষক নিয়োগের চেষ্টা করছি।”

কালের সমাজ // র.ন

Side banner
Link copied!