খুলনা জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ হারুনুর রশিদ ও সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রেজা রশিদের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি ও কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের গুরুতর অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান বরাবর পাঠানো এক লিখিত অভিযোগে এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করেছেন খুলনার রূপসা উপজেলার বাসিন্দা এস এম নুরুল ইসলাম (বাবুল)।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ১৯ নভেম্বর ২০২৩ থেকে ২ ডিসেম্বর ২০২৪ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে ওই দুই কর্মকর্তা খুলনা জেলা পরিষদের বিভিন্ন বরাদ্দ ও তহবিল থেকে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে কোটি কোটি টাকা উত্তোলন ও আত্মসাৎ করেছেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, আর্থিক অনুদানের নামে বাজেট বরাদ্দের প্রায় ৬ গুণ বেশি প্রায় ৩ কোটি টাকা বিভিন্ন ব্যক্তির নামে বিতরণ করা হয়, যার অধিকাংশ চেক হিসাবধারী হলেও ঐ ২ কর্মকর্তার যৌথ স্বাক্ষরে `ওপেন` করে নগদে উত্তোলন করা হয়।
এছাড়া, ভুয়া প্রকল্পের নামে ২.৫০ লাখ টাকা করে একাধিক চেক হিসাবধারী ইস্যু করে সেগুলো যৌথ স্বাক্ষরে `ওপেন` করে অর্থ সরাসরি ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয় বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযোগে আরও বলা হয়, এসব অর্থ উত্তোলন করা হয়েছে সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, খুলনা কর্পোরেট শাখায় জেলা পরিষদের এনএসডি হিসাব থেকে।
পরবর্তীতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আর্থিক অনিয়মের কারণে টাকা প্রদান বন্ধ করলে নতুনভাবে জনতা ব্যাংক, যশোর রোড শাখায় মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়াই একটি নতুন হিসাব খোলা হয়, যা স্থানীয় সরকার বিভাগের নির্ধারিত নিয়মবহির্ভূত।
অভিযোগকারীর দাবি, জেলা পরিষদের উন্নয়ন তহবিল (এডিপি) থেকে প্রাপ্ত সাড়ে ১৩ কোটি টাকা স্থানান্তর করে ঝুঁকিপূর্ণ ইউনিয়ন ব্যাংকে রাখা হয়, যেখানে আর্থিক সুবিধা নেওয়ার বিনিময়ে ওই কর্মকর্তা ও পরিষদ চেয়ারম্যান সরকারি অর্থ ঝুঁকির মধ্যে ফেলেন। বর্তমানে ঐ ব্যাংক আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত এবং টাকা ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট জেলা পরিষদ ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ফলে গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র ধ্বংস হয়ে গেছে, তবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর চেক ভাউচার ও হিসাব নথিপত্র পর্যালোচনা করলেই দুর্নীতির সত্যতা উদঘাটন সম্ভব।
অভিযোগকারী এস এম নুরুল ইসলাম অনতিবিলম্বে তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন।
স্থানীয়রা বলছেন, সরকারি তহবিল ব্যবহারে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা এবং জনগণের অর্থ যথাযথ ব্যবহারে কঠোর নজরদারি প্রয়োজন।
কালের সমাজ/ সাএ
আপনার মতামত লিখুন :