বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের স্বেচ্ছাচারী আচরণ ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার অভিযোগ এনে চাকরি থেকে পদত্যাগ করেছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নাদিয়া সারোয়ার।গত ২৩ মার্চ ই-মেইলের মাধ্যমে পদত্যাগপত্রটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেন তিনি।
পদত্যাগপত্রে তিনি উল্লেখ করেন, কানাডার একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জনের জন্য কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক শিক্ষা ছুটির নীতিমালা অনুসারে ২৬ আগস্ট ২০১৭থেকে ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত ছুটি প্রদান করা হয়েছিল।
 
পরবর্তীতে পিএইচডি প্রোগ্রামে অধ্যায়নের জন্য কুবি কর্তৃপক্ষ ২৬ ডিসেম্বর ২০১৯ থেকে ২৫ আগস্ট ২০২৪ পর্যন্ত তাকে শিক্ষা ছুটি মঞ্জুর করে। উল্লেখিত সময়কালে প্রতিবছরই তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যোগাযোগ রেখছেন।
তাঁর পিএইচডি থিসিস এর ফিল্ড কানাডায় হওয়ায় ফলোআপ ফিল্ডওয়ার্ক ও থিসিস লেখার কাজ যথাযথ সম্পন্ন করার জন্য আরও এক বছর সময় প্রয়োজন বিধায় ২০২৪ সালের ২৬ আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের ২৫ আগস্ট পর্যন্ত জন্য প্রোগ্রামের সর্বশেষ অগ্রগতির বিবরণ ও সুপারভাইজারের সুপারিশপত্র সহ বিশেষ ছুটির আবেদন করেন তিনি।
এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ২০২৪ সালের ১৭ অক্টোবর আমার বিশেষ ছুটির আবেদন নামঞ্জুর করে ৮ সপ্তাহের মধ্যে তাঁকে কর্মস্থলে যোগদানের নির্দেশ দেয়। পরে তিনি ২৬ আগস্ট থেকে পরবর্তী এক বছরের বিশেষ ছুটির জন্য আবেদন করেন।
২০২৫ সালের ১৪ জানুয়ারি রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকা সংক্রান্ত কারণ দর্শানোর একটি নোটিশ পাঠানো হয়। ২৬ জানুয়ারি কারণ দর্শানো চিঠির জবাব দিয়ে পুনরায় ছুটির আবেদন করেন তিনি।
পদত্যাগের বিষয়ে নাদিয়া সারোয়ার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমার আবেদন আমলে না নিয়ে  আমার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেছে এবং পরবর্তীতে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে যা আমাকে চরমভাবে হতাশ ও অপমানিত করেছে।
সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উচ্চতর ডিগ্রি যথাযথভাবে সম্পন্ন করতে শিক্ষকদের অতিরিক্ত ছুটি প্রদান খুবই সাধারণ একটি বিষয়।  করোনার কারণে আমি যথাসময়ে ডিগ্রি শেষ করতে পারিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা এবং এ বিষয়ে সকল তথ্য-প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাকে ছুটি দেইনি।  তাঁরা আমাকে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে  চাকুরী হতে ইস্তফা প্রদানে বাধ্য করেছে। তাঁরা যে আচরণ করেছে তা স্বেচ্ছাচারী এবং অন্যায্য। বিশ্ববিদ্যালয় হতে প্রদেয় বেতন-ভাতাদির সাথে আমার প্রাপ্য আর্থিক সুবিধাদির হিসাব সমন্বয় করে সঠিক অর্থের পরিমাণ জানানোর জন্য আমি আমার ইস্তফা পত্রে উল্লেখ করেছি। সঠিক পরিমাণ জানালে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত রীতি ও বিধি মোতাবেক পরিশোধ করব।
অভিযোগের বিষয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল বলেন, আমাদের যেসব শিক্ষকরা বাইরে রয়েছে তাঁরা আমার সাথে যোগাযোগ করে। আমরা তাঁদেরকে পরামর্শ দেই এবং আইন ও বিধি অনুযায়ী তাদেরকে ছুটি দিয়ে থাকি। কিন্তু নাদিয়া সারোয়ার আমার সাথে যোগাযোগ করেনি। আমরা কেন তাঁকে চাকরি থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করবো? আমরা নিয়ম ও প্রক্রিয়া অনুযায়ীই তাঁর বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা কখনোই চাই না কেউ চাকরি ছেড়ে যাক।
উল্লেখ্য, ২০১২  সালে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে যোগদান করেন এই শিক্ষক।
 
কালের সমাজ// এ.জে

                                                
            
         
                    
                    
                    
                    
                    
                    
                    
                    
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
      
          
আপনার মতামত লিখুন :