ঢাকা মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই, ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২

ধনবাড়ীতে ঈদুল ফিতরের আনন্দ বাড়িয়ে তুলেছে মাংস সমিতি

জহিরুল ইসলাম মিলন (ধনবাড়ী) টাঙ্গাইল মার্চ ২৭, ২০২৫, ০২:৫৬ পিএম ধনবাড়ীতে ঈদুল ফিতরের আনন্দ বাড়িয়ে তুলেছে মাংস সমিতি

সেহেরির পরপরই গরু জবাই হয়েছে। চামড়া ছাড়ানো থেকে শুরু করে মাংস কাটা মাপযোগে ব্যস্ত মানুষ। এটি কোরবানির ঈদের আয়োজন না হলেও আমেজটা তার চেয়ে কম নয়।

আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার পাড়ায় পাড়ায় অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মাংস সমিতি। এই সমিতির প্রত্যেক সদস্য সপ্তাহে ১০০ টাকা করে জমা দেন। কোনো কোনো জায়গায় মাসে মাসে  জমা দিয়ে থাকেন। মাংসের দাম বাড়ায় এ কৌশল অবলম্বন করেছেন গ্রামের মানুষ। আর এতে সাধ্যের মধ্যে পাতে তুলে নিতে পারেন মাংসের টুকরো।

অনেক পরিবার রয়েছে যাদের একবারে দুই থেকে তিন কেজি মাংস কেনার সামর্থ্য নেই। তাই সাপ্তাহিক ১০০ টাকা করে জমা রেখে ঈদুল ফিতরের ৫-১০ দিন আগে থেকে গরু জবাই শুরু করে। আর সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকায় ৮ থেকে ১০ কেজি পর্যন্ত মাংস পেয়ে থাকেন তাঁরা। আর এ কারণে গ্রামের মানুষ এটাকে মাংস সমিতি নামকরণ করেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা হলে তাঁরা বলেন, ‘একবারে টাকা গুছিয়ে ৮-১০ কেজি মাংস কেনা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই আমরা এই কৌশল অবলম্বন করেছি। তা ছাড়া সপ্তাহে ১০০ টাকা রাখতে আমাদের কষ্ট হয় না। এ মাংস সমিতিটা এখন বিভিন্ন গ্রামের পাড়া–মহল্লায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।’

উপজেলার পৌর শহরের ৮ নং ওয়ার্ড এর বাসিন্দা দেলুয়ার হোসেন বলেন, ‘ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আমরা মাংস সমিতি করেছিলাম। আমাদের সাড়ে চার হাজার টাকা করে জমা হয়েছিল। গরু কিনে জবাই করা হয়ে গেছে, আমরা প্রতিজন সাড়ে ৪ হাজার টাকায় ৮ থেকে ৯  কেজি করে মাংস পেয়েছি। মাসে  ৩০০ টাকা করে জমা দিতে আমাদের কখনো বেগ পেতে হতো না। কিন্তু একবারে ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকার মাংস কেনা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।’

 মো: আম্বাছ  বলেন, ‘ঈদুল ফিতরের পরের সপ্তাহ থেকে টাকা উত্তোলন শুরু হয়। এটা আমাদের এক বছরের হিসাব। যতজন সদস্য হবে, প্রত্যেককে ৩০০ টাকা করে দিতে হয়। ঈদুল ফিতরের পাঁচ থেকে দশ দিন আগে নিজের পছন্দমতো গরুগুলো জবাই করে মাংস ভাগ করে নিই। এতে যেমন আমরা সুস্থ গরুর মাংস পাই, অপরদিকে আমাদের একবারে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকার যে কষ্ট, সেটা হয় না।’

আম্বাছ হোসেন আরও বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের এখানে গরুর মাংস সাড়ে ৭৫০ টাকা কেজি, মহিষের ৯০০ টাকা ও খাসির মাংস ১ হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রয় হয়। সে ক্ষেত্রে আমাদের সমিতির মাধ্যমে যে গরু কিনি, সেটার মাংস ৬ থেকে ৬৫০ কেজি পড়ে।’

পাইস্কা গ্রামের মো. মোতালেব হোসেন বলেন, ‘আমরা সাড়ে ১২ হাজার টাকা করে সমিতি করেছিলাম। মাংস পেয়েছি ১৯ কেজি ও ভুঁড়ি পেয়েছি ৩ কেজি। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে দিন দিন এই মাংস সমিতি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।’

উপজেলার ধনবাড়ী  বাজারের মাংস ব্যবসায়ী ফটু হোসেন বলেন, ‘ঈদুল ফিতরে আমরা যে মাংস বিক্রির টার্গেট নিয়েছিলাম, সেটা হয়তো পূর্ণ হবে না। কারণ, অধিকাংশ পাড়া–মহল্লায় মাংস সমিতি গড়ে উঠেছে। আর যদি আমরা মাংস বিক্রি করতে না পারি, তাহলে লোকসান গুনতে হবে। কারণ, আমরা ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আলাদা বাজেট করি গরু কেনার জন্য।


কালের সমাজ//এ.জে

Side banner

পথে-প্রান্তরে বিভাগের আরো খবর

Link copied!