ঢাকা সোমবার, ০৪ আগস্ট, ২০২৫, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২

মোংলায় তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ জনজীবন।

কালের সমাজ | খান আশিকুজ্জামান , মোংলা বাগেরহাট প্রতিনিধি মে ১২, ২০২৫, ০২:০০ পিএম মোংলায় তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ জনজীবন।

খরতাপে পুড়ছে মোংলা। বৈশাখের শুরুতেই প্রখর রোদ আর উত্তপ্ত বাতাসে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। রাস্তাঘাট ফাঁকা, বাজারে নেই ক্রেতার ভিড়, খেটে খাওয়া মানুষের কপালে ঘাম আর দুশ্চিন্তা—দুটোই।

সোমবার (১২মে)মোংলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কয়েক দিন ধরেই চলছে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ। পরিস্থিতির উন্নতি শিগগির হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া কর্মকর্তারা।


খুলনা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ মো. শাহ আলম  বলেন, ‍‍`এখন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে শুষ্ক ও উষ্ণ বায়ু প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে তাপমাত্রা আরও কিছু দিন বাড়তেই পারে। মেঘ না থাকায় সূর্যের তাপ সরাসরি পড়ছে, এতে ভ্যাপসা গরম আরও বেশি অনুভূত হচ্ছে।‍‍`

এই তাপদাহে সবচেয়ে বেশি ভুগছেন খোলা আকাশের নিচে কাজ করা মানুষজন। রিকশাচালক, ভ্যানচালক, হকার, নির্মাণশ্রমিক—প্রতিদিনই রোদে পুড়ে জীবন চালাতে হচ্ছে তাঁদের।


রিকশাচালক সুমন  বললেন, ‍‍`সকাল হইতেই মনে হয় আগুন পড়ছে গায়ে। রিকশা চালাইতে পারি না ঠিকমতো। কিন্তু না চালাইলে খাব কী?‍‍`


বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে। সবজি বিক্রেতা এনামুল বলেন, ‍‍`এই রোদের মধ্যে মানুষ বাইরে আসে না। সকালবেলা দুই একজন আসে, তারপর পুরো বাজার ফাঁকা হয়ে যায়।‍‍`


শুধু শ্রমজীবী নয়, ভোগান্তিতে আছেন ব্যবসায়ীরাও। মোংলার কাপড় ব্যবসায়ী মো. রিপন হাওলাদার বলেন, ‍‍`বিক্রিবাটা বলতে গেলে বন্ধ। দিনের বেলায় কেউ দোকানে আসে না। সন্ধ্যায় একটু ভিড় হয়, তাও খুব সামান্য।‍‍`

গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন অনেকে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে পানিশূন্যতা ও ডায়রিয়ার হার বেড়েছে।

মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. শাহিন বলেন, ‍‍`এই গরমে সবাইকে সাবধান থাকতে হবে। যারা রোদে কাজ করেন, তাঁদের হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। প্রচুর পানি খেতে হবে এবং হালকা ও সুষম খাবার খেতে হবে।‍‍`


গরমের তীব্রতা শুধু শরীরেই নয়, প্রভাব ফেলছে মানুষের মনে। ক্লান্তি ও বিরক্তি যেন চোখেমুখে ফুটে উঠছে সবার। স্কুলে উপস্থিতি কমছে, বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, আর পথের গাছপালাও ঝিমিয়ে পড়েছে।

মোংলার আকাশের দিকে তাকিয়ে এখন অনেকেই শুধু একটাই কামনা করছেন—একটি ফোঁটা বৃষ্টি। যা হয়তো কিছুটা স্বস্তি ফিরিয়ে দেবে এ শহরের ক্লান্ত মানুষদের।

 

 

কালের সমাজ/খা.আ./ সাএ

 

 

Side banner
Link copied!