পার্বত্য জেলার বান্দরবানের লামা ও আলীকদম উপজেলার সীমান্তবর্তী মারাইংতং পাহাড়ে সীমানা নির্ধারণের আগে সকল স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। একই সঙ্গে তাঁবু স্থাপন, বাইক পার্কিং, রাত্রিযাপনসহ ভ্রমণ সংক্রান্ত কোনো ধরনের অর্থ লেনদেন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সোমবার (২০ অক্টোবর) বিকেলে মারাইংতং পাহাড়ের বিরোধপূর্ণ এলাকা পরিদর্শন শেষে এ নির্দেশনা দেন দুই উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা।
আলীকদম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনজুর আলম জানান, আগামী মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) লামা ও আলীকদম উপজেলার সার্ভেয়ারদের মাধ্যমে পাহাড়ের সীমানা নির্ধারণ করা হবে। তিনি বলেন,
“সরকারি জমি দখল করে কেউ রিসোর্ট বা স্থাপনা নির্মাণ করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা ও মামলা দায়ের করা হবে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি একটি চক্র ‘মারাইংতং বৌদ্ধ জাদী’-এর নাম ব্যবহার করে সাংগু মৌজার মুরুং সম্প্রদায়ের দখলীয় জমি দখলের চেষ্টা চালায়। এ ঘটনায় সাংগু মৌজার হেডম্যান চ্যংপাত ম্রো লামা উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজদারি অভিযোগ (নং ২১/২০২৫) দায়ের করেন। আদালত ওই বিরোধীয় জায়গায় স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেন।
তবে অভিযোগ রয়েছে, আদালতের আদেশ অমান্য করে ওই জায়গায় “মারাইংতং হিল রিসোর্ট” নির্মাণ ও একটি বৌদ্ধমূর্তি স্থাপনের কাজ শুরু হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মঈন উদ্দিন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুবায়েত আহমেদ, আলীকদম থানার ওসি তোফাজ্জল হোসেনসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। এ সময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক এবং মুরুং সম্প্রদায়ের অর্ধশতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মঈন উদ্দিন বলেন,
“দীর্ঘদিন ধরে দুই উপজেলার সীমানা নিয়ে বিরোধ চলছিল। আদালতের স্থিতাবস্থার আদেশ অমান্য করে কিছু নির্মাণ কাজ হয়েছে—সরেজমিনে তার প্রমাণ মিলেছে। তাই সীমানা নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রাখতে আবারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, আগামী ২৮ অক্টোবর দুই উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও সার্ভেয়ার দ্বারা তৈন ও সাংগু মৌজার বন্দোবস্তিকৃত মোট ১০ একর জায়গা পরিমাপ করা হবে। এর মাধ্যমে দীর্ঘদিনের সীমানা বিরোধের সমাধান হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
কালের সমাজ/ সাএ
আপনার মতামত লিখুন :