ঢাকা শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫, ৯ কার্তিক ১৪৩২

গোপালগঞ্জ ১ আসনে আলোচনায় বিএনপি প্রার্থী সেলিমুজ্জামান

জেলা প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ | অক্টোবর ২৩, ২০২৫, ০১:৪০ পিএম গোপালগঞ্জ ১ আসনে আলোচনায় বিএনপি প্রার্থী সেলিমুজ্জামান

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গোপালগঞ্জ ১ আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (দায়িত্ব প্রাপ্ত ফরিদপুর বিভাগীয়) সেলিমুজ্জামান সেলিম। 


চায়ের দোকান থেকে শুরু করে কৃষকের মুখে মুখে ২০২৬ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা চলে সকাল সন্ধা, কারো মনে সংশয় তো কেউ বলছে নির্বাচন সঠিক সময়েই হবে। প্রার্থী হিসেবে দীর্ঘ দিন একনায়কতন্ত্র চলায় আওয়ামী অধুসিত এলাকা হওয়া সর্তেও কতিপয় লোকের একক ক্ষমতা ও দূর্ণীতির কারণে মুকসুদপুর কাশিয়ানী গ্রাম পর্যায়ে আশানুরূপ উন্নয়নের ছোঁয়া না লাগায় এবং দীর্ঘ একটা সময় ধরে নিজের ভোট নিজে দিতে না পারায়, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে হতে যাওয়া নির্বাচনে তাঁরা তাঁদের স্বাধীন মত প্রকাশ ও নিজের ভোট নিজে দিবে এই প্রত্যাশায় প্রার্থী বাছাইয়েও সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন গোপালগঞ্জ ১ এর ভোটারেরা। তাঁদের মধ্যে  অধিকাংশ ভোটার চাইছেন, এমন দল যারা ক্ষমতায় আসতে পারে এবং যে প্রার্থী সবসময় এলাকার খোঁজ খবর রাখেন, এলাকায় নিয়মিত আসাযাওয়া করেন তাঁকেই আমরা মুকসুদপুর কাশিয়ানীর এমপি হিসাবে দেখতে চাই। সে ক্ষেত্র বিএনপি সম্ভাব্য প্রার্থী সেলিমুজ্জামান সেলিম হবেন আমাদের প্রথম পছন্দ, কথাগুলো বলছিলেন মুকসুদপুরের চা ব্যাবসায়ী জাহিদ মোল্ল। সেলিমুজ্জামান সেলিম দীর্ঘদিন ধরে বৃহত্তর ফরিদপুরে মাঠ পর্যায়ে এবং কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা, ত্যাগী ও দূর্দিনে কর্মীদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা এবং ব্যাক্তিগত ক্লিন ইমেজের কারণে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মাঝে জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান করছেন বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। 


সেলিমুজ্জামান সেলিম ১৯৭০ সালে কাশিয়ানী উপজেলার মহেশপুর ইউনিয়নের সম্ভ্রান্ত মোল্লা পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর দাদা আলিম মোল্লা ঐ অঞ্চলের পঞ্চায়ত প্রধান ছিলেন। বাবা আলহাজ্ব মোয়াজ্জেম হোসেন একজন সরকারি কর্মকর্তা হলেও শৈশবে তাঁর বেড়ে ওঠা গ্রামেই, জয়নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া শুরু করেন এবং জয়নগর হাইস্কুল থেকে এসএসসি পাশ করে ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজে হায়ার সেকেন্ডারিতে ভর্তি হোন, ঢকা রেসিডেন্সিয়াল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে উচ্চ শিক্ষা লাভের আশায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলে শুরু হয় তাঁর রাজনৈতিক জীবন।


প্রথমে ১৯৮৯ সালে স্যার এফ রহমান হল ছাত্রদলের জয়েন্ট সেক্রেটারি, পরে ২ বার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।  তিনি ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের মেম্বর এবং পরে প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক পরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক এবং সহ সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। যুবদলে থকা অবস্থায় তিনি দলটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন। ১৯৯৬/ ৯৭ সালে বিএনপি এ নেতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। বর্তমাননে সেলিমুজ্জামান সেলিম৷ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর কার্য নির্বাহী কমিটির (দায়িত্ব প্রাপ্ত ফরিদপুর বিভাগীয়) সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। 


বিগত আওয়ামী সরকারের দুঃশাসন ও মামলা হামলা গুম খুন সহ দ্রব্য মূল্যের উর্ধগতি, প্রহসনের নির্বাচনের প্রতিবাদ আন্দোলনে সমগ্র দেশ যখন উত্তাল তখন তিনি প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দেন।  আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা ও তৃর্ণমূল নেতাকর্মীদের আওয়ামী সন্ত্রাসী ও পুলিশের হাত থেকে রক্ষা করতে তাঁকে বার বার কারা বরণ করতে হয়। এপর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে  দেড়শতাধীক মামলা রাজনৈতিক মামলা রয়েছে বলে জানাগেছে। 


তৃণমূল নেতাকর্মীদের প্রতি দায়িত্ব বোধ ও যত্ন নেওয়ার কারণে সারা দেশে তরুণ সমাজের কাছে তিন খুবই জনপ্রিয় একজন কর্মী বান্ধব নেতা হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছেন। ছাত্র রাজনীতি ও যুব রাজনীতি করায়, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ও যুবলের একটি বিরাট অংশের উপর তাঁর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে বলে অনেকে দাবি করেন।
তাঁর নেতাকর্মীরা দাবি করেন তাঁর স্মৃতি শক্তি এতোই  প্রখর,  তৃণমূলের একজন সাধারণ কর্মীও যদি, একবার তাঁর সাথে পরিচিত হন পরক্ষণে তাকে আর পরিচয় করিয়ে দিতে হয় না। কর্মী বান্ধব নেতা হওয়ায় কর্মীর হাড়ির খবরও তিনি রাখেন বলে অনেকে জানান।
সেলিমুজ্জামান সেলিম ২০০৮ সালে প্রথমবারের মত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ধানের শিষ প্রতিক নিয়ে তাঁর নিজ এলাকা, গোপালগঞ্জ ১ আসন থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন, তরুণ উদীয়মান নেতা হিসাবে তখন তিনি ব্যাপক সারা ফেলে ছিলেন মুকসুদপুর কাশিয়ানীর তরুণ সমাজে, যা বর্তমান সময়েও সমান ভাবে ধরে রেখেছেন। 
২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনেও দলথেকে নমিনেশনের বড় দাবিদার ছিলেন বিএনপি এ নেতা,  শেষ পর্যন্ত না পেলেও হতাশ হোন নাই,বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের এবং কেন্দ্রীয় বিএনপির নেতৃবৃন্দের প্রতি আস্তা রেখে নিজেকে রাজনিতীতে আরো পরিপক্ব করেছেন, দূর্দিনে নেতাকর্মীদের বুকে আগলিয়ে রেখেছিলেন, হামলা মামলায়, আন্দোলন সংগ্রামে পুলিশে গ্রেফতার হওয় কর্মীদের আইনি সহায়তা, পরিবারকে অর্থিক সাহায্যের মাধ্যমে তাঁদের পাশে থেকে মনোবল যোগান ও দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা নেতাকর্মীদের একত্রিত করে ফের ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে সামিল হওয়া এসব ছিলো তাঁর রাজনৈতিক রুটিন ওয়ার্ক। তিনি মনে করেণ তৃণমূলই তাঁর রাজনীতির মূল শক্তি।
সাধারণ মানুষের চোখে সেলিমুজ্জামান সেলিম একজন জনদরদী ও সদালাপি বলে বেশ পরিচিত, আওয়ামী সরকারের শত বাঁধা উপেক্ষা করে নিজ এলাকায় নিয়মিত কর্মীদের সাথে যোগাযোগ এবং হাটে বাজারে, চায়ের আড্ডায় আবার কখনও কখনও বাড়ী বাড়ী গিয়ে খেটে-খাওয়া মানুষের খোঁজ রাখতেন বলে এলাকবাসী দাবি করেণ। এলাকায় অন্যান্য কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা থাকলেও এলাকায় সেলিমুজ্জামান সেলিম এর গ্রহণযোগ্যতা সবচেয়ে বেশি হওয়ায় ২০২৬ সালের হতে যাওয়া নির্বাচনে তিনিই এখানে বিএনপির একমাত্র প্রার্থী বলে সাধারণ মানুষের  ধারণা ।
৫ আগষ্ট পরবর্তী সময়ে তাঁর নির্বাচনী এলাক ব্যাস্ত থেকেছেন বিভিন্ন সভা, সমাবেশ, মিছিল, মিটিংয়, সামাজিক অনুষ্ঠানে কখনও ফরিদপুর, কখনও মাদারীপুর, শরিয়তপুর, রাজবাড়ী এবং নিজ এলাকা মুকসুদপুর কাশিয়ানী সহ গোপালগঞ্জে জাতীয়তাবাদী রাজনীতিতে তাঁর সরব উপস্থিতি নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করে চলেছেন। এবছর সনাতন ধর্মাবলম্বী হিন্দুের শারদীয় দুর্গাপূজায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সহ তাঁর নেতাকর্মীদের রেখেছিলেন সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে। এ কারণে ২০২৫ সালের দুর্গাপূজা যে কোন বছরের চেয়ে আনন্দঘন ও উৎসব মুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে দাবি করেন, সনাতন ধর্মাবলম্বী পরিবারের লোকজন। এবার অন্তত ৮৪ টি পূজামন্ডপ পরিদর্শন করছেন বলে জানান বিএনপি এ নেতা, মন্ডপে মন্ডপে বাদ্যযন্ত্র ঢাক, ঢোল, বাঁশি বাজিয়ে উলুধ্বনিতে তাঁকে বরণ করে নেন পূজারীরা এবং তাঁদের মধ্যে একটি বিরাট অংশ ধানের শিষ প্রতিকে ভোট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
২০২৬ সালের ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সঙ্ভাবনা না থাকায় দল থেকে তিনি নমিনেশন পেলে জয়ী হবেন বলে সাধারন ভোটারদের ধারনা। ভোটারদের একটি বিরাট অংশ বয়সে তরুণ হওয়ায়ও তাঁর জয়ে ভূমিকা রাখবে বলে অনেক রাজনৈতিকেরা মত দেন, বয়সে তরুণ ও মিষ্টি ভাষী হওয়ায় জনপ্রিয়তায় নারী ভোটারদের কাছেও তিনি অন্যান্য প্রার্থীর চেয়ে এগিয়ে থাকবেন বলে আাশা করেণ তাঁর দলের নারী নেতৃবৃন্দ, দেশে নির্বাচনে হাওয়া লাগতেই মহিলা দলের নেত্রীরা দলোবদ্ধ হয়ে লিপলেট হাতে বাড়ী বাড়ী গিয়ে নারী ভোটারদের কাছে, বিএনপির প্রার্থী হিসেবে সেলিমুজ্জামান সেলিম এর জন্য দোয়া ও ধানের শিষের পক্ষে ভোট চাইছেন। উপজেলা বিএনপি সহ ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল, শ্রমীক দল, মৎস দল ভাগ ভাগ হয়ে উপজেলা ব্যাপি গণসংযোগ, লিপলেট বিতরণের মাধ্যমে সেলিমুজ্জামান সেলিম এর পক্ষে প্রচারণায় ব্যাস্ত সময় পার করছে।

 

কালের সমাজ/ সাএ

 

 

Side banner

গ্রাম-গঞ্জ বিভাগের আরো খবর

Link copied!