বাংলার হারিয়ে যাওয়া লোকজ অলংকারের সৌন্দর্য, ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক তাৎপর্য নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে “বাংলার লোকজীবনে ব্যবহৃত লোক অলংকার” শীর্ষক এক ব্যতিক্রমী প্রদর্শনী।
শনিবার (২৮ জুন) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনের ৫ম তলার করিডরে ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
প্রদর্শনীতে শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে সংগ্রহ করা বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী নারীদের অলংকার প্রদর্শন করেন। প্রদর্শিত অলংকারের মধ্যে ছিল রুদ্রাক্ষ, কল্কা, রূপার নূপুর, নাকছাবি, ঘুঙরু, কাঠের চুড়ি, শাঁখের মালা, হাতির দাঁতের দুল, বাঁশের কেশবন্ধনী, পুতির মালা, ধান তাবিজ, টিকলী, তুলসী মানা, মাটির চুড়ি, তিন ধাতুর চুড়ি, তামার পেটি এবং রত্নপাথরের আংটি প্রভৃতি।
শিক্ষার্থীরা জানান, এই অলংকারগুলো তাদের দাদী-নানীদের সময় ব্যবহার হতো, যা এখন বিলুপ্তির পথে। তারা নিজেরাই বিভিন্ন স্থান থেকে এই অলংকার সংগ্রহ করে প্রদর্শনীর জন্য প্রস্তুত করেছেন। এগুলো শুধু সৌন্দর্যবর্ধক নয়, বরং লোকবিশ্বাস ও সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবেও ব্যবহৃত হতো।
ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. এরশাদুল হক বলেন, “এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে বাংলার গ্রামীণ সমাজে প্রচলিত ঐতিহ্যবাহী অলংকারের নান্দনিকতা, ব্যবহারিক দিক এবং সাংস্কৃতিক গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিটি উপাদান আমাদের লোকসংস্কৃতির জীবন্ত সাক্ষ্য বহন করে।”
বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক ড. শিবলী চৌধুরী বলেন, “শিক্ষার্থীরা একটি অসাধারণ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। এর মাধ্যমে ঐতিহ্যবাহী অলংকারের ইতিহাস ও শিল্পকৌশল নতুন প্রজন্মের কাছে সফলভাবে তুলে ধরা হয়েছে, যা ভবিষ্যৎ গবেষণার জন্য একটি মূল্যবান ভিত্তি।”
কালের সমাজ//এসং.র.ন
আপনার মতামত লিখুন :