যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে ভয়াবহ বন্যায় প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৮ জনে। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত ৪১ জন।
সোমবার (৭ জুলাই) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা কের কাউন্টি। এখানেই ৬৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ২৮ জনই শিশু। নদীতীরবর্তী এক খ্রিস্টান গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্পে অবস্থানরত এসব শিশুরা দুর্ঘটনার সময় সেখানে ছিল। নিখোঁজদের মধ্যে ক্যাম্পের ১০ জন কিশোরী এবং একজন পরামর্শকও রয়েছেন।
উদ্ধারকর্মীদের বরাতে জানা গেছে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। কারণ, অনেক এলাকা এখনো কাদাপানিতে ডুবে রয়েছে এবং আবর্জনায় ভরা। পরবর্তী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নতুন করে ঝড় ও বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস থাকায় উদ্ধার তৎপরতা বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলেও সতর্ক করা হয়েছে।
উদ্ধারে অংশ নেওয়া কর্মীরা জানান, কাজের সময় তারা বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছেন— ভেঙে পড়া গাছপালা ও কাদার সঙ্গে সঙ্গে বিষধর সাপ ও বিপজ্জনক প্রাণীর সম্মুখীনও হতে হচ্ছে তাদের।
কের কাউন্টি থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৮ জন প্রাপ্তবয়স্ক ও ১০ জন শিশুকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তবে তাদের পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
রোববার (৬ জুলাই) এক সংবাদ সম্মেলনে টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট বলেন, যতক্ষণ না প্রত্যেক নিখোঁজ ব্যক্তিকে খুঁজে পাওয়া যায়, ততক্ষণ উদ্ধার অভিযান অব্যাহত থাকবে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে ‘মারাত্মক দুর্যোগ’ আখ্যা দিয়ে কের কাউন্টিকে জাতীয় দুর্যোগপ্রবণ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করেছেন। এর ফলে ফেডারেল এমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি (FEMA) এখন জরুরি সহায়তা নিয়ে মাঠে নেমেছে।
ট্রাম্প আরও জানান, তিনি আগামী শুক্রবার (১১ জুলাই) ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যাবেন এবং টেক্সাসের স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ে কাজ করছে কেন্দ্রীয় সরকার। তার ভাষায়, “এটি যে কতটা ভয়াবহ পরিস্থিতি, তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন— একেবারেই হৃদয়বিদারক।”
উল্লেখ্য, শুক্রবার (৪ জুলাই) থেকে টেক্সাসে টানা বৃষ্টিপাতের ফলে আকস্মিক বন্যা দেখা দেয়, যা মুহূর্তেই ভয়াবহ রূপ নেয়।
কালের সমাজ//র.ন
আপনার মতামত লিখুন :