ঢাকা বুধবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৫, ৬ কার্তিক ১৪৩২

ন্যায্য দাবিতে রাস্তায় শিক্ষকরা- কাজিপুরে এমপিওভুক্তদের অবস্থান কর্মসূচি

জেলা প্রতিনিধি, সিরাজগঞ্জ | অক্টোবর ২১, ২০২৫, ০৬:৪৩ পিএম ন্যায্য দাবিতে রাস্তায় শিক্ষকরা- কাজিপুরে এমপিওভুক্তদের অবস্থান কর্মসূচি

আমরা ছাত্রদের আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলছি, অথচ নিজেরা বঞ্চিত মৌলিক অধিকার থেকে!" — চোখে-মুখে ক্ষোভ আর কণ্ঠে দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে এমনই মন্তব্য করছিলেন সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার এক এমপিওভুক্ত শিক্ষক। মঙ্গলবার ২১ অক্টোবর সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত উপজেলা পরিষদ চত্বরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পাদদেশে অনুষ্ঠিত হয় তাদের অবস্থান কর্মসূচি।

২০% বাড়ি ভাতা, ১৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা এবং কর্মচারীদের ৭৫% উৎসব ভাতাসহ তিন দফা দাবিতে এ কর্মসূচিতে অংশ নেন উপজেলার ৮৫টি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শত শত শিক্ষক-শিক্ষিকা।
অবস্থান কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন আলমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান। সঞ্চালনা করেন সোনামুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম।
বক্তব্য রাখেন শিক্ষক ইউনূস উদ্দিন, নূরুল ইসলাম, লুৎফর রহমান, শফিকুল ইসলাম, সাদ্দাম হোসেন, আশাদুর রহমান, এস.এম. আব্দুর রহমান, আয়শা খাতুন ও সেলিম রেজা প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, “শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড হলেও সেই মেরুদণ্ডকেই বারবার অবহেলা করা হচ্ছে। সরকারি চাকরিজীবীদের তুলনায় এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা ভাতার ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।”

আলমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক নূরুল ইসলাম বলেন,“আমরা মাস শেষে যে বেতন পাই, তা দিয়ে সংসার চালানো কষ্টসাধ্য। চিকিৎসা বা উৎসবের খরচ মেটানো প্রায় অসম্ভব। সরকারের প্রতি আমাদের আবেদন, ন্যায্য দাবিগুলো যেন দ্রুত বাস্তবায়ন করা হয়।”

সোনামুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সেলিম রেজা বলেন, “শিক্ষক সমাজ আর নিরব দর্শক নয়। আজকের অবস্থান কর্মসূচি ন্যায্য অধিকার আদায়ের সংগ্রামেরই অংশ।”

বাংলাদেশের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা বছরের পর বছর ধরে সরকারি সুবিধা বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে আসছেন। ২০% বাড়ি ভাতা, চিকিৎসা ভাতা বৃদ্ধি এবং উৎসব ভাতা সমান করার দাবিটি তাদের পুরোনো। ২০২৩ সালে আংশিকভাবে কিছু সুবিধা বৃদ্ধি পেলেও মাঠপর্যায়ের শিক্ষকরা বলছেন, তা পর্যাপ্ত নয়। তারা চান সরকারি চাকরিজীবীদের সমান সুযোগ-সুবিধা।

অবস্থান কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হলেও বক্তারা জানিয়েছেন—দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। আমরা শিক্ষার সেবক, কিন্তু অন্যায়ের প্রতিবাদে আমরা ঐক্যবদ্ধ। সরকার আমাদের দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন না করলে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।

কাজিপুরের শিক্ষক সমাজের এই আন্দোলন এখন শুধু দাবি নয়—এটি শিক্ষকদের মর্যাদা, ন্যায্যতা ও আত্মসম্মানের প্রতীক হয়ে উঠেছে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের এই শিক্ষকরা সরকারের প্রতি একটাই আবেদন জানাচ্ছেন আমাদের প্রাপ্যটি দিন, আমরা আরও নিবেদিতভাবে জাতি গড়ায় মন দেব।

 

 

কালের সমাজ/ সাএ


 

Side banner
Link copied!