দুইবারের সংসদ সদস্য, সাদামাটা ও নির্লোভ জীবনযাপনের জন্য পরিচিত সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের সাবেক এমপি আলহাজ্ব মো. নূরুল ইসলাম তালুকদার ওরফে চাঁন মিয়া ইন্তেকাল করেছেন। সোমবার (১৭ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরী গ্রামে নিজ বাড়িতে বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯০ বছর।
মরহুম স্ত্রী, এক ছেলে ও তিন মেয়েসহ অসংখ্য শুভাকাঙ্ক্ষী রেখে গেছেন। কৈজুরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন খোকন মাস্টার তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, “চাঁন মিয়া বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন। তিনি অত্যন্ত সৎ, সহজ-সরল ও জনদরদি নেতা ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে ইউনিয়নে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।” মঙ্গলবার বাদ যোহর স্থানীয় ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হবে।
১৯৩৫ সালে কৈজুরী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন নূরুল ইসলাম তালুকদার চাঁন। কৈজুরী স্কুল থেকে প্রাথমিকে, সিরাজগঞ্জ বিএল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে মাধ্যমিকে এবং সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। এরপর তিনি ১০ বছর সরকারি চাকরিতে কর্মরত ছিলেন এবং সততার জন্য পুরস্কৃত হন। মানুষের সেবার ব্রত নিয়ে সরকারি চাকরি ছেড়ে তিনি পল্লী উন্নয়ন সমিতির নেতৃত্বে যুক্ত হন। পরে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন সমবায় ফেডারেশনের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন।
১৯৭৩ সালে কৈজুরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পরিচালক নির্বাচিত (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়)। ১৯৮৪ সালে দ্বিতীয়বার ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত। ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টির মনোনয়নে সিরাজগঞ্জ-৬ আসনে এমপি নির্বাচিত। পরবর্তী নির্বাচনেও একই আসনে পুনরায় এমপি হন।
রাজনীতির সব পর্যায়ে তিনি সততা ও সাধারণ মানুষের জন্য নিষ্ঠাবান কাজ করে স্থানীয়দের ভালোবাসা অর্জন করেন। নিজের জীবনে অর্জিত অধিকাংশ অর্থ তিনি এলাকার উন্নয়নে ব্যয় করেছেন বলেও জানা যায়। তিনি সিরাজগঞ্জ জেলা জাতীয় পার্টির সিনিয়র সহ-সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন।
চাঁন মিয়ার মৃত্যুতে চৌহালী-শাহজাদপুরসহ সিরাজগঞ্জজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয়রা বলছেন, “তিনি ছিলেন সত্যিকারের জননেতা—নিঃস্বার্থ, সদালাপী ও উন্নয়নবান্ধব। তাঁর শূন্যতা সহজে পূরণ হবে না।”
কালের সমাজ/ সাএ


আপনার মতামত লিখুন :