ঢাকা শনিবার, ১৭ মে, ২০২৫, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

টেকসই সংস্কারে বাংলাদেশকে সহযোগিতার আশ্বাস জাতিসংঘের

নিজস্ব প্রতিবেদক মে ১৬, ২০২৫, ০৬:২১ পিএম টেকসই সংস্কারে বাংলাদেশকে সহযোগিতার আশ্বাস জাতিসংঘের

স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বাংলাদেশে টেকসই সংস্কারে সহায়তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে জাতিসংঘ। এমন মন্তব্য করেছেন সংস্থাটির বাংলাদেশে আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস।

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ সরকার ও জাতিসংঘ কান্ট্রি টিমের যৌথ স্টিয়ারিং কমিটি (জেএসসি)-র দ্বিবার্ষিক সভায় তিনি এ কথা বলেন। সভায় সহ-সভাপতিত্ব করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী এবং গোয়েন লুইস। এতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও জাতিসংঘের শীর্ষ কর্মকর্তারা অংশ নেন।

গোয়েন লুইস বলেন, “টেকসই সংস্কার, জলবায়ু সহনশীলতা, অর্থনৈতিক রূপান্তর, জেন্ডার সমতা ও সমাজের কেউ যাতে পেছনে না পড়ে— সেজন্য জাতিসংঘ বাংলাদেশকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।”

তিনি আরও বলেন, “চলতি বছর চ্যালেঞ্জিং হলেও বাংলাদেশ আত্মমর্যাদাবোধ ও দৃঢ়তা দেখিয়েছে। জাতিসংঘ ও বাংলাদেশের অংশীদারত্ব যৌথ মূল্যবোধ ও আকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে।”

সভায় ২০২৪ সালের জাতিসংঘ কান্ট্রি রেজাল্ট রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। এতে জানানো হয়, জাতিসংঘ চলতি বছর বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মসূচিতে ২১ কোটি ৫০ লাখ ডলার অর্থায়ন করেছে।

এই অর্থায়নে—এলডিসি উত্তরণে সহায়তা, বেসরকারি খাতে ৪ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি, ১১৬টি প্রতিষ্ঠানের টার্নওভার বৃদ্ধিতে সহায়তা, ১১ হাজারের বেশি তরুণ-তরুণীকে ডিজিটাল দক্ষতা প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।

সামাজিক সুরক্ষায় অন্তত ৪ কোটি মানুষ, শিশু সুরক্ষায় ৫ লাখ ৮০ হাজার এবং এইচপিভি টিকাদানে ৫৬ লাখ কিশোরী উপকৃত হয়েছে বলে জানানো হয়।

জলবায়ু দুর্যোগে ৪ কোটি ৪০ লাখ ডলারের সহায়তা দেওয়া হয়েছে,১৭ লাখ ২০ হাজার দুর্যোগকবলিত মানুষ সরাসরি সহায়তা পেয়েছেন,২০ লাখ মানুষের মধ্যে জলবায়ু ঝুঁকি সচেতনতা তৈরি করা হয়েছে।

শাসনব্যবস্থা ও লিঙ্গ সমতার ক্ষেত্রে—গ্রামীণ এলাকায় ৬৬ শতাংশ গ্রাম্য আদালত কার্যকর করতে সহায়তা করা হয়েছে, ৬ কোটি ১০ লাখ মানুষ এই সেবার আওতায় এসেছে।

এছাড়া যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও গার্হস্থ্য সহিংসতা আইনের সংস্কারে ভূমিকা রেখেছে জাতিসংঘ।

জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে ইউএনএসডিসিএফ (২০২২-২০২৬) কাঠামো এক বছর বাড়ানো হয়েছে। এর আওতায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে জাতিসংঘের পাঁচটি কৌশলগত অগ্রাধিকার— টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন,মানবসম্পদ উন্নয়ন ও কল্যাণ, সহনশীল পরিবেশ, সুশাসন, লিঙ্গ-সমতা ও সহিংসতা নির্মূল।

ইআরডি সচিব শাহরিয়ার কাদের বলেন, “বাংলাদেশ ক্লাইমেট ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপের মতো প্ল্যাটফর্মে জাতিসংঘের অব্যাহত সমর্থন প্রয়োজন।”

তিনি প্রধান উপদেষ্টার ‘তিন শূন্য নীতির’ আলোকে যুব কর্মসংস্থান, সামাজিক উদ্যোগ ও প্রভাবভিত্তিক অর্থায়নকে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানান।

সভা শেষে ইউএনএসডিসিএফ মূল্যায়ন কার্যক্রমের সূচনা এবং এসডিজি ও এলডিসি উত্তরণে গতি আনার প্রতিশ্রুতি গৃহীত হয়।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, জেএসসির পরবর্তী সভা চলতি বছরের শেষ দিকে অনুষ্ঠিত হবে।

 

কালের  সমাজ//এ.স//এ.জে

Side banner