ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৫ মে, ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

চাঁদপুরে বেপরোয়া ট্রাক্টর ও ভটভটিতে বাড়ছে দুর্ঘটনা

কালের সমাজ | এমতেয়াজ পাটওয়ারী ফরহাদ, চাঁদপুর প্রতিনিধি মে ১৫, ২০২৫, ০৬:৪৭ পিএম চাঁদপুরে বেপরোয়া ট্রাক্টর ও ভটভটিতে বাড়ছে দুর্ঘটনা

চাঁদপুর জেলায় নিয়ন্ত্রণহীনভাবে চলাচল করছে নিষিদ্ধ ট্রলি ও ট্রাক্টর। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এসব যানবাহন বিভিন্ন উপজেলা ও গ্রামীণ সড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। লাইসেন্স, হর্ণ কিংবা সিগনাল লাইট ছাড়াই এসব অবৈধ যান ব্যবহার করা হচ্ছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এগুলো চালাচ্ছে অদক্ষ বা কিশোর চালকরা।


এর ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা, প্রাণ হারাচ্ছে পথচারী ও যাত্রীরা। পাশাপাশি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত গ্রামীণ সড়কগুলো।


সরেজমিনে দেখা গেছে, চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কসহ ফরিদগঞ্জ, হাইমচর, হাজীগঞ্জ ও শাহরাস্তি উপজেলার গ্রামীণ রাস্তায় নির্বিঘ্নে চলছে সেচযন্ত্রচালিত অবৈধ ভটভটি ও ট্রাক্টর। মূলত কৃষিকাজের জন্য ভর্তুকিতে কেনা ইঞ্জিনের পেছনে ট্রলি সংযুক্ত করে মাটি, বালু, ইট, কাঠসহ বিভিন্ন মালামাল পরিবহনে এসব ব্যবহার করা হচ্ছে।


স্থানীয়রা বলছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখের সামনে এসব যান চলাচল করলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না।


চাঁদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মো. নাহিদ জানান, “এসব যানবাহনের বেপরোয়া চলাচলের কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। আমরা আতঙ্কে থাকি।”


হাজীগঞ্জের বাসিন্দা মামুন মিয়া অভিযোগ করে বলেন, “ইটভাটা মালিকরা ট্রাক্টর ব্যবহার করে কৃষি জমির টপ সয়েল বিক্রি করছে। ফলে কৃষি জমিও নষ্ট হচ্ছে।”


মাসুদ মিয়া, হাইমচরের এক বাসিন্দা বলেন, “পূর্বে এইসব যান বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হলেও এখন আবার আগের চেয়ে বেশি দাপট বেড়েছে।”


জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কৃষিকাজ ছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্যে এসব যান সড়কে চলাচলের অনুমতি নেই। পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব জানিয়েছেন, থানাগুলোকে এসব যানবাহনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হবে।


ফরিদগঞ্জের ইউএনও সুলতানা রাজিয়া বলেন, “ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ইতোমধ্যে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। স্থায়ীভাবে এসব বন্ধে প্রশাসন তৎপর রয়েছে।”


বিশেষজ্ঞ ও পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্থানীয়ভাবে তৈরি এসব যানবাহনের নেই কোনো ফিটনেস সনদ বা ব্রেকিং সিস্টেম, ফলে এগুলো দিয়ে মাল পরিবহন যেমন ঝুঁকিপূর্ণ, তেমনি সড়ক নিরাপত্তার জন্যও হুমকি।


তাদের মতে, আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ ও জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম জোরদার করলেই এসব অনিয়ম কমানো সম্ভব।


কালের সমাজ//এসং//র.ন

Side banner