ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই, ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২

রংপুরে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হলো ‘জুলাই শহীদ দিবস’

কালের সমাজ | আশরাফ খান কিরণ, রংপুর ব্যুরো জুলাই ১৬, ২০২৫, ০৫:৩২ পিএম রংপুরে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হলো ‘জুলাই শহীদ দিবস’

১৬ জুলাই, বুধবার—নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে রংপুরে পালন করা হয়েছে ‘জুলাই শহীদ দিবস’। ফ্যাসিবাদবিরোধী গণআন্দোলনে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের স্মরণে সরকার ২০২৪ সালে এই দিনটিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘জুলাই শহীদ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে।

 

দিবসটির শুরুতে সকাল সাড়ে ৭টায় রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার মদনখালী ইউনিয়নের জাফরপাড়া বাবনপুর গ্রামে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত ও পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়। এ সময় তার রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকাত আলী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা।

 

শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন শহীদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন। তিনি সন্তানের হত্যার সুষ্ঠু বিচার এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে দিবসটির স্থায়ী স্বীকৃতির দাবি জানান। এ সময় উপাচার্য ড. শওকাত আলী বলেন, “আবু সাঈদের আত্মদান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। আমরা তার স্মৃতি সংরক্ষণের পাশাপাশি বিচারপ্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্নের জন্য সবসময় সক্রিয় রয়েছি।”

 

দিনব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকাল সাড়ে ৯টায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কালো ব্যাজ ধারণ করে শোক র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিটি ক্যাম্পাসের দক্ষিণ গেট থেকে শুরু হয়ে নগরীর মডার্ন মোড় ঘুরে শহীদ আবু সাঈদ গেটে গিয়ে শেষ হয়।

 

সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আবু সাঈদ তোরণ ও মিউজিয়ামের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। এছাড়া, শহীদ হওয়ার স্থানে ‘আবু সাঈদ চত্বর’ ঘোষণা করে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়।

 

বেলা ১১টায় শুরু হয় আলোচনা সভা। এতে অংশ নেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য—আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার এবং মুক্তিযুদ্ধ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বীরপ্রতীক ফারুক ই আজম।

 

আলোচনা সভার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শহীদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রংপুরের বিভিন্ন এলাকার শহীদ পরিবারের সদস্যরা।

 

দিবসটি উপলক্ষে বিকেলে ক্যাম্পাসের ক্যাফেটেরিয়ায় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা এবং সন্ধ্যায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের আত্মদানের স্মরণে এ কর্মসূচি দেশব্যাপী গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও ন্যায়ের সংগ্রামে অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠেছে বলে মত দেন আয়োজকরা।

 

কালের সমাজ//এসং.র.ন

Side banner
Link copied!