ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই, ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২

বেরোবিতে যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ আবু সাঈদের স্মরণে ‍‍`জুলাই শহীদ দিবস‍‍` পালিত

কালের সমাজ জুলাই ১৬, ২০২৫, ০৬:২০ পিএম বেরোবিতে যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ আবু সাঈদের স্মরণে ‍‍`জুলাই শহীদ দিবস‍‍` পালিত

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুরে (বেরোবি) যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হলো কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের প্রথম শাহাদাত বার্ষিকী ও সরকার ঘোষিত ‍‍`জুলাই শহীদ দিবস‍‍`। দিবসটি উপলক্ষে বুধবার (১৬ জুলাই) দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

 

দিনের সূচনা হয় সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে শহীদের গ্রামের বাড়ি পীরগঞ্জ উপজেলার বাবনপুরে যাত্রার মাধ্যমে। সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

 

সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের দক্ষিণ গেট থেকে এক শোক র‌্যালি বের হয়। র‌্যালিটি প্রধান ফটক, শহীদ আবু সাঈদ চত্বর, মর্ডাণ মোড় হয়ে ‍‍`শহীদ আবু সাঈদ গেট‍‍` দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করে। সকাল ১০টায় শহীদ তোরণ ও মিউজিয়ামের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং ১০টা ১৫ মিনিটে শহীদ আবু সাঈদ চত্বরে স্মৃতিস্তম্ভের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।

 

সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে স্বাধীনতা স্মারক মাঠে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন শহীদ আবু সাঈদের বাবা মো. মকবুল হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা প্রফেসর ড. আসিফ নজরুল, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এস. এম. এ ফয়েজ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের এবং ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান।

 

সভায় আবু সাঈদের বাবা স্মৃতিচারণ করে বলেন, "আমি গর্বিত আবার শোকাহত। আবু সাঈদ শুধু আমার ছেলে নয়, ছিল জাতির জন্য নিবেদিত এক সৈনিক। তার আত্মত্যাগ যেন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের চোখ খুলে দেয় এই আশাই রাখি।"

 

উপস্থিতি বক্তৃতায় ড. আসিফ নজরুল বলেন, "আবু সাঈদের মৃত্যু আমাদের মনে করিয়ে দেয় এই দেশে এখনো ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়াতে হয় তরুণদেরই। তিনি ছিলেন প্রতীকের মতো এক সাহসী কণ্ঠ।"

 

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, "আবু সাঈদ আমাদের জন্য সাহসের ভাষা হয়ে উঠেছেন। তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন যে সত্য ও ন্যায়ের জন্য দাঁড়ানোও শিক্ষা।"

অনুষ্ঠানের সার্বিক বিষয় নিয়ে উপাচার্য ড. মোঃ শওকাত আলী বলেন, "আবু সাঈদের আত্মত্যাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। তাঁর স্মৃতিকে সম্মান জানাতে বিভিন্ন স্থাপনা ও কার্যক্রম বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।"

 

সভা শেষে রংপুর অঞ্চলের শহীদ পরিবারের কাছে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে শহীদ আবু সাঈদ স্মৃতি কর্ণার উদ্বোধন করেন শহীদের পিতা। পরবর্তীতে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল এবং বিকেলে চিত্রাঙ্কন ও বিতর্ক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়।

 

উল্লেখ্য, দিবসটি উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্লাস, পরীক্ষা ও একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। বিভিন্ন বিভাগ, ইনস্টিটিউট ও দপ্তর থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সক্রিয়ভাবে অংশ নেন কর্মসূচিতে।

 

কালের সমাজ//এসং.র.ন

Side banner

শিক্ষা বিভাগের আরো খবর

Link copied!