চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে পাঁচ দিনের ব্যবধানে একে একে তিনটি মরদেহ উদ্ধারের পাশাপাশি ছিনতাই ও কুপিয়ে জখমের একাধিক ঘটনায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে জনমনে। ১৯ থেকে ২২ জুলাইয়ের মধ্যে সংঘটিত এসব ঘটনায় এলাকাবাসী প্রশাসনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করছে, সামাজিক মাধ্যমে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ১৯ জুলাই ফটিকছড়ি পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের একটি পুকুর থেকে মো. এনাম (৬০) নামের এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরদিন ২০ জুলাই লেলাং খালে রিকশাচালক সন্তোষ নাথের ঝুলন্ত মরদেহ পাওয়া যায়। ২২ জুলাই মাইজভাণ্ডার এলাকায় একটি টয়লেট থেকে আরমান নামের এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ছাড়া ২০ জুলাই পাইন্দংয়ে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন এক মাদ্রাসাছাত্র। ২২ জুলাই আমানবাজার এলাকায় চলাচলের পথ নিয়ে বিরোধের জেরে একজনকে কুপিয়ে জখম করা হয়।
ফটিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর আহমদ বলেন, প্রতিটি ঘটনা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। রিকশাচালক সন্তোষ ও যুবক আরমান হত্যার ঘটনায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে লেলাংয়ের ঘটনায় ৪ জন এবং মাইজভাণ্ডারের ঘটনায় ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদিকে পুকুরে মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় নিহত এনামের ছেলেকে ৫৪ ধারায় আদালতে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে এলে নিশ্চিত হওয়া যাবে এটি হত্যা না আত্মহত্যা। তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক তদন্তে প্রতিটি ঘটনার পেছনে পারিবারিক ও আর্থিক টানাপড়েনের বিষয় পাওয়া যাচ্ছে। পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো গাফিলতি নেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, হঠাৎ করে ঘটে যাওয়া এসব ঘটনায় রাজনৈতিক কোনো ইন্ধন আছে বলে মনে করি না। প্রতিটি ঘটনা কাকতালীয় এবং সামাজিক ও পারিবারিক অবক্ষয়ের কারণে ঘটছে।
এদিকে, একের পর এক প্রাণহানী ও সহিংসতার ঘটনায় চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সচেতন মহল। তাদের অভিযোগ, প্রশাসনের দুর্বল নজরদারি, অপরাধীদের দাপট এবং প্রভাবশালীদের প্রভাব বিস্তারই দিন দিন পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলছে। এখনই কঠোর ব্যবস্থা না নিলে ফটিকছড়ি বড় ধরনের অঘটনের দিকে ধাবিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।
কালের সমাজ//র.ন
আপনার মতামত লিখুন :